বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের ভাইরাল হওয়া তালিকাটি কি সঠিক?

109
বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের ভাইরাল হওয়া তালিকাটি কি সঠিক?
বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের ভাইরাল হওয়া তালিকাটি কি সঠিক?

Published on: [post_published]

২১ মার্চ ২০২১ তারিখে Chowdhury Mohammad নামের একটি ফেইসবুক আইডি থেকে ‘আসুন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও কর্মকর্তাদের সাথে পরিচিত হই’ শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করা হয়েছে যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উচ্চ পদে থাকা ব্যক্তিদের নাম, ইমেইলের ঠিকানা এবং ফোন নম্বর দেয়া হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখে গেছে, এটি মিথ্যা তথ্য সংবলিত উসকানিমূলক ফেইসবুক পোস্ট যেটির স্ক্রিনশট ইতিমধ্যে ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে এবং বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

বিষয়টি সম্পর্কে বিশদ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে আরও আশ্চর্যজনক তথ্য। উক্ত ফেইসবুক পোস্টটি সাম্প্রতিক নয়, এটি সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছিল ‘মুসলিমদের সিন্ধুকের চাবি যখন হিন্দুদের হাতে’ শিরোনামে যেখানে প্রায় একই রকম একটি তালিকা ছিলো।

উক্ত পোস্টে লেখা ছিলো, “দেশের শীর্ষস্থানীয় সরকারি পদগুলিতে মুসলমানের তুলনায় ব্যাপকহারে চলছে হিন্দু নিয়োগ। ৮.৫% হিন্দুদের হাতে চলে যাচ্ছে ৮০% অর্থনীতি প্রশাসনসহ নানা খাতের শীর্ষপদসমূহ । নিজ দেশেই বৈষম্যের শিকার মুসলমানরা। এজন্যই বুঝি রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে এত চুলকানি। কারণ তখন আর পার্সেন্ট হিসাব করা লাগবেনা! সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০কোটি টাকা চুরি হয়েছে। মুসলিম যুবকেরা যখন দেশে চাকুরী না পেয়ে বিদেশে পাড়ি দিয়ে হাড়ভাঙ্গা শ্রম বিক্রি করে, দেশে ডলার পাঠাচ্ছে তাদের টাকার পাহারাদার কারা দেখে নিন

সময়ের ওপর ভিত্তি করে উক্ত পোস্ট গুলোর উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, এই একই লেখা সংবলিত পোস্টটি ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছিলো।







২১ মার্চ ২০২১ তারিখে পোস্টটি আবার ভাইরাল হবার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করে পাওয়া গেছে, উক্ত পোস্টে উল্লেখিত তথ্য মিথ্যা এবং উসকানিমূলক। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়নের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ১৭ জানুয়ারি ২০২১ এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক-পরিচালনা পর্ষদে থাকা ব্যক্তিদের নাম, পদবী এবং নিয়োগের তারিখ নীচে দেয়া হলো।

 


 

উল্লেখ্য, উক্ত তথ্য সংবলিত ফেইসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছিল সেই সময়ে, যখন ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে প্রায় আট কোটি দশ লাখ ডলার চুরি হয়েছিল। সেই অর্থ ফিলিপিন্সের মাকাতি শহরে রিজাল ব্যাংকের শাখায় চারটি ভুয়া অ্যাকাউন্টে থেকে দ্রুত অর্থ উত্তোলন করা হইয়েছিল যা সেসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যপমে প্রচার হয়েছিল। এবিষয়ে বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন পড়ুন।

তথ্যসূত্র

Chowdhury Mohammad এর ফেইসবুক পোস্টের ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশট

বাংলাদেশ ব্যাংক-পরিচালনা পর্ষদ

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@www.fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ fb.com/search.ulab

No Factcheck schema data available.