রবিবার ২৬শে জুলাই একটি ফেইসবুক টাইমলাইনে রাত ১০:৩৭ মিনিটে এই পোস্টটি আসে: “বিশ্বসাহিত্য-কেন্দ্রে রামায়ন, মহাভারত ও ত্রিপিটক পাইলেও আপনি আল-কোরআন পাইবেন নাহ!” এর পর থেকে ফেইসবুকে এই পোস্ট টি নামে বেনামে ছড়িয়ে পড়ছে এবং জনমনে প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। এমন অবস্থায় আজ সোমবার, ২৭শে জুলাই ফ্যাক্টওয়াচের পক্ষ থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পাঠাগারে গিয়ে দেখা গেছে যে, তাদের পাঠাগারে পবিত্র কুরআন সংরক্ষিত আছে। অতএব এই দাবিটি মিথ্যা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পাঠাগারে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার নেই। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের পক্ষ থেকে যোগযোগ করলে তারা আমাদেরকে পাঠাগারের সংগ্রহ দেখার বিশেষ অনুমতি দেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পাঠাগার আমাদের প্রতিনিধির তোলা এই প্রামাণ্য ছবি গুলো আপনাদের সামনে দেয়া হলঃ
এই বক্তব্যের উৎস হিসেবে আরেকজন ফেইসবুক ব্যবহারকারীর নাম উল্লেখ করা হয়। পোস্টের বক্তব্য বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে বলে ফ্যাক্টওয়াচ এই পরিচয়গুলি সংরক্ষণ করলেও প্রকাশ করছে না। ফেইসবুকের এডিট হিস্টোরি তে দেখা যাচ্ছে, পোস্টটি প্রথম প্রকাশের পর ১০ বারের বেশি এডিট করা হয়েছে। তাতে বলা আছে,“পোস্টটি নানা সময়ে পরিমার্জিত, প্রয়োজন অনুসারে আরো পরিমার্জন করা হবে।”
উল্লেখ্য, পোস্টের কমেন্টে একজন ছবি দিয়ে দেখান যে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে কুরআন রয়েছে এবং একজনকে পাঠরত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।
দেখুন সংযুক্ত ছবিঃ
এর প্রেক্ষিতে পোস্টে এই বক্তব্য সংযোজন করা হয়ঃ
“বিশেষভাবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এ ধরনের কিতাব রাখা বা না রাখা বড় কথা নয় (যেহেতু এর বাধ্যবাধকতা নাই)। যদিও নিচে কমেন্টে অনেকে সাক্ষ্য দিতেছেন যে, তারা রাখে।”
তার পরেও পোস্টের প্রাথমিক দাবিটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
ফ্যাক্টওয়াচের প্রতিনিধি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের পাঠাগারে গেলে সেখানে আল কোরআন এর বাংলা এবং ইংরেজি অনুবাদ সহ বিভিন্ন সংস্করণ সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়া ধর্মীয় গ্রন্থের শেলফে অন্যান্য ধর্মের সাথে সাথে বিভিন্ন রকম ইসলামী বই ও দেখা যায়। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দেখানো হয় আশির দশকের শুরু থেকেই কেন্দ্রে পবিত্র কুরআন রয়েছে এবং পাঠকরা তা পড়ার জন্য নিয়ে গেছেন তা নিবন্ধিত আছে। বর্তমানে পবিত্র কুরআন গুরুত্বপূর্ণ “রেফারেন্স” বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তা শুধু মাত্র কেন্দ্রে বসে পাঠ করা যায়। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত “নুরনবী” এবং “হাদিসের কথা” প্রায় দুই যুগ ধরে স্কুলভিত্তিক বই পড়া কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। তাদের বিক্রয় কেন্দ্রেও ইসলামী বই রয়েছে। সুতরাং নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আল কোরআন পাওয়া যাবে না, এই দাবিটি মিথ্যা।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?