১০০০ টাকার লাল নোট বাতিল হওয়ার গুজব

18
১০০০ টাকার লাল নোট বাতিল হওয়ার গুজব ১০০০ টাকার লাল নোট বাতিল হওয়ার গুজব

Published on: [post_published]

‘ব্রেকিং নিউজ ১ হাজার টাকার লাল নোট বাতিল ঘোষণা, ৩০ মের আগেই ব্যাংকে জমা দেয়ার নির্দেশ’’-এমন একটি গুজব অতি সম্প্রতি ফেসবুকে এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে । তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নোট বাতিলের এই খবরটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

গুজবের উৎস

১১ই মে বিকাল ৩ টা থেকে ফেসবুকে এই গুজবটা ভাইরাল হতে দেখা যায়। এমন কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে

এসব গুজবের সাথে একটি বিজ্ঞপ্তির ছবিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, জামালপুর এর কর্মকর্তার সাক্ষর ও সিলমোহর রয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে , বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশক্রমে ১০০০ টাকা মূল্যমানের লাল নোট লেনদেনের সর্বশেষ সময়সীমা ৩০.০৫.২০২২ ইং তারিখ পর্যন্ত। এরপর আর কোনো ১০০০ টাকা মূল্যমানের লাল নোট ব্যাংকে জমা নেওয়া হবে না। সুতরাং ৩০/০৫/২০২২ ইং তারিখ দুপুর ১২.০০ টার মধ্যে ১০০০ টাকা মূল্যমানের লাল নোট ব্যাংকে জমাদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল।

পরবর্তী দিন হতে ১০০০ টাকা মূল্যমানের লাল নোট অচল বলে গণ্য হবে।

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, জামালপুর এর নামে প্রচারিত এই বিজ্ঞপ্তিটি সঠিক, নাকি এডিট করা, সেটি ফ্যাক্টওয়াচ যাচাই করতে পারেনি।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জামালপুর এর ওয়েবসাইটে পাওয়া ফোন নাম্বার  এ কল করে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

তবে , বাংলাদেশ ব্যাংকের আনভেরিফাইড ফেসবুক পেজ, Bangladesh Bank-The Central Bank of Bangladesh, এ ১১ই মে সন্ধ্যা ৬ টা ১ মিনিটে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির ছবি আপলোড করা হয়।

ঢাকার সকল ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রধান বার্তা সম্পাদক কে এ্যাড্ড্রেস করে এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ১০০০ টাকা মূল্যমানের লাল নোট আগামী ৩০-০৫-২০২২ তারিখের পর অচল হিসেবে গণ্য হবে মর্মে সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইন প্লাটফর্মে গুজব/বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারিত হচ্ছে যা বাংলাদেশ ব্যাংকের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

এক্ষণে, জনগণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ১০০০ টাকা মূল্যমানের লাল নোট বা অন্য কোন নোট অচল হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি । তদপ্রেক্ষিতে, জনসাধারণকে উক্ত গুজব/বিভ্রান্তিকর তথ্য আমলে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

এই বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয় এর ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেনস এন্ড পাবলিকেশনস এর মহাব্যবস্থাপক , জী এম আবুল কালাম আজাদ এর সাক্ষর রয়েছে।

এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে উৎস ধরে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম নোট বাতিলের খবরটি গুজব মর্মে সংবাদ প্রকাশ করেছে। যেমন- ডেইলি স্টার , যুগান্তর ইত্যাদি।

এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম একাধিক সংবাদমাধ্যম কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এ ধরনের কোন নির্দেশনা জারি করেনি। তিনি সাধারণ মানুষকে এ নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।

সিরাজুল ইসলাম কে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে , বাংলা ট্রিবিউন , সারা বাংলা , সময়ের কণ্ঠস্বর সহ একাধিক সংবাদমাধ্যম ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৮ই নভেম্বর ভারতে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার সকল নোট বাতিল করা হয়েছিল। এই ঘটনাকে ‘নোটবন্দী’ নামে অভিহিত করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অনুরূপ কোনো ঘটনা এ দেশে ঘটছে না। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া এই খবরটিকে গুজব হিসেবে সাব্যস্ত করছে ।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.