এই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের নমুনা হিসেবে শেয়ার হচ্ছে।
আপাতদৃষ্টিতে সিলেটে কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের দুই সম্প্রদায়ের বিভাজনের বিশ্রী নমুনার সাধারণ প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।
প্রকৃত অর্থে এই চায়ের দোকানগুলি ঔপনিবেশিক আমলের অবশিষ্টাংশ যখন মুসলমান এবং হিন্দুদের জন্য রান্নাঘর আলাদা ছিলো।
ঢাকা ট্রিবিউন দোকানটি এবং দোকানের মালিক দিলীপ কুমার পালকে খুঁজে পায় যিনি বলেছেন, “ভাই, আমি এই দোকানটি কিশোর বয়স থেকে চালাচ্ছি। আমার বাবা এবং চাচারা ব্রিটিশ রাজের আমল থেকে এই দোকানটি চালিয়েছেন । আমাদের বাবা-চাচারা দোকানটির ধর্মীয় একটা ঢঙ দিয়েছেন যাতে করে যারা ধর্মীয় বিশুদ্ধতার (শুচিতা) প্রয়োজনবোধ করেন তারা যেন এখানে চা পান করতে আরামবোধ করেন। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, এটি এখনকার জন্যও তেমনি আছে বা কেবল হিন্দুদের চা খাওয়াই আর মোসলমানদের ফিরিয়ে দেই। আমি সকল বর্ণ, ধর্ম ও মতের কাস্টমার পাই।”
একজন ফেসবুক ইউজার, ছবিটি ব্যবহার করে ‘জ্বালাময়ী ব্যাখ্যা’র ভুলের দিকে ইঙ্গিত করে বলছেন, তিনি নিজেই প্রত্যক্ষদর্শী যেখানে হিন্দু টি স্টলে মোসলমানরা চা খাচ্ছে।
ঔপনিবেশিক বাংলায় রান্নাঘরগুলির বিভাজন সাহিত্যে বহুভাবে এসেছে। উৎস রয়ের এর বই ঔপনিবেশিক ভারতে রান্নাবান্নার প্রথা: মধ্যবিত্ত শ্রেণী এবং একটি বিশ্বজনীন থালা (Culinary Culture in Colonial India: A Cosmopolitan Platter and the Middle Class), বাঙাল মধ্যবিত্তর খাবার অভ্যাস এবং একে ঘিরে বিদ্যমান সাহিত্যগুলার উপর আলোকপাত করেছে। বিভূতিভুষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর আদর্শ হিন্দু হোটেলে, নায়ক পশ্চিমবঙ্গের রাণাঘাট রেলওয়ে স্টেশনে সরকার চালিত হিন্দু হোটেলের টেন্ডার পান। পুরো প্ল্যাটফর্ম ঐ একই নামের আদলে চলে এখনো পর্যন্ত। সাংবাদিক আবুল ফজল তার ১৯৬৬ এর বই রেখাচিত্রতে লিখেছেন, “ আমার এক হিন্দু বন্ধুর বাড়িতে মুরগী খাবার পর পেটে সমস্যা দেখা দিয়েছিলো। যদিও, এইটা বলা মুশকিল ছিলো যে রান্না খারাপের কারণেই নাকি মুরগীটা অপবিত্র থাকার কারণেই আমার শরীল খারাপ হলো । আমি মৌলবিদের (ইসলামের ধর্মপ্রচারক) একটা পরিবার থেকে এসেছি। অতএব এই কুসংস্কার থাকা অস্বাভাবিক নয়।”