সম্প্রতি ফেসবুকে শেয়ার হওয়া কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে যে, ২০২৩ সালের জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশ এই জোটের সদস্য না হয়েও আমন্ত্রিত একমাত্র দেশ এবং তথ্যসূত্র হিসেবে আনন্দবাজারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে সরাসরি এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। সেখানে কেবল উল্লেখ করা হয়েছে যে, জি২০-র সদস্য না হলেও দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, জি-২০’র সদস্য বহির্ভুত আমন্ত্রিত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও মোট ৮ টি দেশের নাম খুঁজে পাওয়া যায়। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে।
জি ২০ ফোরাম (গ্রুপ অফ ২০) হচ্ছে একটি আন্তঃসরকারি ফোরাম যা ১৯টি সার্বভৌম রাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU), এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন (AU) নিয়ে গঠিত। এটা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক বিষয়গুলো সম্পর্কিত আলোচনা ও সমন্বয় করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র। এই ফোরামের সদস্যরা প্রতি বছর একটি সম্মেলনে মিলিত হয়। ২০২৩ জি-২০ সম্মেলন ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ৯–১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।
ফেসবুকে শেয়ার হওয়া পোষ্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে ২০২৩ জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশ এই জোটের সদস্য না হয়েও আমন্ত্রণ পাওয়া একমাত্র দেশ। সেখানে তথ্যসূত্র হিসেবে আনন্দবাজার পত্রিকাটির নাম ব্যবহার করা হয়েছিল। তাই এ ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে জানার জন্য আনন্দবাজারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রাসঙ্গিক কিছু কি- ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায় এই পত্রিকাটি সরাসরি এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি বরং সেখানে উল্লেখ ছিল, “জি২০-র সদস্য না হলেও দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে বাংলাদেশ দু’দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে।”
অন্যদিকে, ২০২৩ জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়া আর কোনো দেশ আমন্ত্রিত ছিল কি না এ সম্পর্কে জানার জন্য ফোরামটির ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করা হয়। সেখান থেকে জানা যায় বাংলাদেশ ছাড়াও মোট ৮ টি দেশ এই সম্মেলনে আমন্ত্রিত ছিল যাদের মধ্যে কেউই জি-২০’র সদস্য রাষ্ট্র নয়।
ভারতীয় সংবাদসংস্থা ANI এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে এই আমন্ত্রিত দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের যোগদান করতে দেখা যায়।
অতয়েব, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।