যা ছড়িয়েছে: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা মেট্রোতে হরিনাম প্রচার করছে।
ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত: দাবিটি বিভ্রান্তিকর। আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশের মেট্রোতে ধারণ করা হয়নি। মূল ঘটনা হলো ভারতের বাসিন্দা অর্জুন ভৌমিক দিল্লির মেট্রোতে “গোবিন্দ বলো হরি” নামে একটি গান গেয়েছিল। সেই গানের ভিডিও বর্তমানে “বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা মেট্রোতে হরিনাম প্রচার করছে” দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। অর্জুন ভৌমিকের ইউটিউব চ্যানেলে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, মেট্রোর ভেতরে তিনি প্রায় সময় বিভিন্ন ধরণের গান করেন।
ফেসবুক ভাইরাল এমন কিছু লিংক বাছাই করা হয়েছে। যা দেখতে পাবেন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির সাথে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা সেটি যাচাই করতে আমরা পুরো ভিডিওটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করি। ভিডিওটির এক পর্যায়ে দেখা যায় মেট্রোরেলের ভেতরে সিটের জানালার উপরে ভারতের পতাকার স্টিকার লাগানো আছে। তাছাড়া বাংলাদেশে আমরা যে ধরণের মেট্রোরেল দেখি, তার সাথে এই ভিডিওতে থাকা মেট্রোরেলের সাদৃশ্য নেই।
এ পর্যায়ে “গোবিন্দ বলো হরি” এ জাতীয় গান যে ছেলেটিকে গাইতে দেখা যাচ্ছে তার ছবি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। সেখান থেকে পাওয়া যায় ছেলেটির নাম অর্জুন ভৌমিক। ভারতের রাজধানী দিল্লির বাসিন্দা তিনি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে নিজেকে “সঙ্গীতশিল্পী” হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অর্জুন ভৌমিকের ইউটিউবে চ্যানেলে গিয়ে দেখা যায় সেখানে তিনি অসংখ্য গানের ভিডিও আপলোড করেছেন। কখনো পার্কে, কখনো মেট্রোরেলের মধ্যে বা খোলা মাঠে তিনি গান করেন। এ সময়ে তার সাথে অন্যান্য সাথীরা থাকেন।
৭ জুন ২০২৪ তারিখে “Govind bolo hari gopal Delhi metro” শিরোনামে “Arjun bhowmick” অর্থাৎ তার নিজ নামে থাকা ইউটিউবে চ্যানেলে গানটি প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে সেখান থেকে ভিডিওটি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে “বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা মেট্রোতে হরিনাম প্রচার করছে”।
অতএব, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির সাথে বাংলাদেশের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং, সেটি ভারতের দিল্লির মেট্রোরেলে ধারণ করা ভিডিও।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিকে বিভ্রান্তিকর বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।