শিশু আয়াত হত্যার আসামি আবির গণপিটুনিতে মারা যায়নি

57
শিশু আয়াত হত্যার আসামি আবির গণপিটুনিতে মারা যায়নি
শিশু আয়াত হত্যার আসামি আবির গণপিটুনিতে মারা যায়নি

Published on: [post_published]

“আয়াত হত্যার আসামি আবিরকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়” — এমন শিরোনামে একটি তথ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটির পক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই এবং শিরোনামের সাথে বিস্তারিত তথ্যেরও কোনো মিল নেই। অন্যদিকে, মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে জানা যায় যে, আসামি আবিরকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণধোলাই দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে আবিরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।    

ফেসবুকে ভাইরাল এমনকিছু পোস্ট দেখুন  এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

কিছু ভুঁইফোড় অনলাইন পোর্টালে “আয়াতকে ৬ টুকরো করে হত্যা, আসামি আবীরকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গনপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে” এই শিরোনামটি ব্যবহার করে বিস্তারিত অংশে ভিন্ন ভিন্ন সংবাদ যুক্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। এই প্রতিবেদনগুলোই ফেসবুকে  প্রচার করা হচ্ছে। কিছু প্রতিবেদনে আয়াত হত্যায় অভিযুক্ত আবির আলির মা-বাবা ও বোনকে রিমান্ডে নেয়ার খবর  প্রচার করা হচ্ছে। আবার কিছু প্রতিবেদনে যমুনা টিভিতে গত ১০ অক্টোবর প্রচার হওয়া  খোদেজা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রতিবেদন যুক্ত করে দেয়া হচ্ছে।  ভুঁইফোড় অনলাইন পোর্টালগুলো থেকে প্রচার হওয়া এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে

তবে, বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে জানা যায়, আয়াত হত্যার সাথে সম্পৃক্ত আবিরকে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষুব্ধ জনতা গণপিটুনি দেয়ার চেষ্টা করেছিল । গত ২৮ নভেম্বর আবিরের ফের রিমান্ডের আবেদনের জন্য আদালতে তোলার সময় তাকে বহনকারী গাড়ি অবরূদ্ধ করে রাখে জনতা। তখন তাকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দেয়ার চেষ্টা করা হয়, যেটি সফল হয় নি। এরপরে দায়িত্বরত পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আবিরকে নিয়ে আদালতের হাজতখানায় রাখে। এ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এবং এখানে

অতএব, এটুকু নিশ্চিত যে, আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষুব্ধ জনতা গণপিটুনি দিয়ে আবিরকে মেরে ফেলতে সক্ষম হয়নি।

চট্টগ্রামে আলিনা ইসলাম আয়াত হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়ার পর গত ২৪ নভেম্বর আবির আলিকে গ্রেফতার করা হয়।  গ্রেফতার হওয়ার পরে প্রথমে তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তখন সে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছিল। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের সম্পুর্ণ রহস্য উন্মোচন করার জন্য তা পর্যাপ্ত ছিল না। তার কাছ থেকে আরও তথ্য বের করার জন্য গত ২৮ নভেম্বর আবারো দশ দিনের রিমান্ডে নেয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করে পিবিআই। আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। আদালত নিশ্চই গণপিটুনিতে মৃত ব্যক্তির জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে না! তাছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যমে গণপিটুনিতে আবিরের মৃত্যু বিষয়ে কোনো তথ্যই প্রকাশিত হয় নি।

উল্লেখ্য, এর আগেও কিছু ভূঁইফোড় অনলাইন পোর্টাল থেকে আয়াত হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত ভিত্তিহীন তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ফ্যাক্টওয়াচ টিম। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে

সঙ্গত কারণে, ভিত্তিহীন এই দাবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.