সরকারি চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে ঢাকা মার্চের খবরটি ভিত্তিহীন

98
সরকারি চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে ঢাকা মার্চের খবরটি ভিত্তিহীন
সরকারি চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে ঢাকা মার্চের খবরটি ভিত্তিহীন

সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট ছড়িয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে সরকারি চাকরিতে যোগদানের বয়স ৩৫ বছর করার জন্য আন্দোলনকারীরা ৫ অক্টোবর মার্চ টু ঢাকা – প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ঘেরাও কর্মসূচি ডেকেছে। তবে জাতীয় কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। বিশ্বাসযোগ্য একটি সূত্রও পাওয়া যায়নি যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে আন্দোলনকারীরা ৫ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি ডেকেছেন। বরং গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার যেই দাবি তা নিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে কয়েকজন উপদেষ্টার সাক্ষাৎ হয়েছে। তাছাড়া চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবি পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। কমিটির প্রধান করা হয়েছে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কমিটির প্রধান আব্দুল মূয়ীদ চৌধুরী বৈঠক করেছেন। এ কমিটি আগামী সাত দিনের মধ্যে পরামর্শ দেবে। তাই ৫ অক্টোবর মার্চ টু ঢাকা-যমুনা ঘেরাও কর্মসূচি -- এ তথ্যটি ভিত্তিহীন।

ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

বিস্তারিত:  

বর্তমানে চাকরিতে প্রবেশের সাধারণত সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর। আর অবসরে যাওয়ার বয়সসীমা ৫৯ বছর। কিছু চাকরিপ্রত্যাশীরা বেশ কয়েক বছর ধরে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ৩০ সেপ্টেম্বর চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। তবে আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদল শেষ পর্যন্ত যমুনায় গিয়ে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা করে। রাত আটটার পর সেখানে থেকে বেরিয়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে থেকে অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেন। পরবর্তীতে আন্দোলনকারীরা জানান তারা আন্দোলন স্থগিত করবেন না। যমুনার পরিবর্তে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবেন তাঁরা।

যথারীতি ২ অক্টোবর বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন করেন চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। সে সময়ে সাংবাদিকদের তাঁরা জানান সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ থেকে এক সংখ্যা কম হলেও মানবেন না। ন্যূনতম চাকরির বসয়সীমা ৩৫ না হলে পরবর্তীতে আবারও মানববন্ধন করবেন তাঁরা। প্রয়োজনে জেলায় জেলায় মানববন্ধন করবেন শিক্ষার্থীরা। বিস্তারিত দেখুন এখানে।  এখানে লক্ষণীয় যে, আন্দোলনকারীরা পুনরায় মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করবেন বলে সাংবাদিকদের কাছে পরিষ্কার করেছেন বিষয়টি। তবে ৫ অক্টোবর মার্চ টু ঢাকা-যমুনা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচির বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছুই বলেন নি।

অপরদিকে, পর্যালোচনা কমিটি প্রধান আব্দুল মূয়ীদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছেন, বয়সসীমা বাড়ানো উচিত। তবে পর্যালোচনা কমিটি সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বয়সসীমা কতটা বাড়ানো যায়। বয়স বৃদ্ধির দাবিতে যারা আন্দোলন করছে তাদের সঙ্গে আমরা বসে ছিলাম৷ সরকারের বর্তমান নীতিমালা এবং ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ও সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে সবকিছু চিন্তা করে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব৷ বয়স বৃদ্ধি করার যৌক্তিকতা আছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বিস্তারিত জানতে পারবেন এখানে

এদিকে একই বিষয় নিয়ে চাকরির বয়স ৩৫ প্রত্যাশী আন্দোলনের সমন্বয়কারী রাসেল আল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ এর দাবিতে বাস্তবসম্মত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক।

সুতরাং সবকিছু বিশ্লেষণ করে এটিই দেখা যাচ্ছে, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে বর্তমান সরকারের সাথে আন্দোলনকারীদের আলোচনা চলছে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা ৫ অক্টোবর মার্চ টু ঢাকা-যমুনা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি রাখেন নি। কেননা কমিটি তাঁদের সিদ্ধান্ত জানাবেন ৭ অক্টোবর। সিদ্ধান্ত মনঃপুত না হলে আবারও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন আন্দোলনকারীরা — এমন একটি বার্তা দিয়ে রেখেছেন।

সঙ্গত কারণে এমন দাবিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।

No Factcheck schema data available.

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh