সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে কিছু ছবি সংবলিত একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, এগুলো “ডকমাই আম” বা “হোয়াইট ম্যাংগো” এর ছবি। উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে উৎপন্ন গোল্ডেন নাম ডক মাই (Golden Nam Dok Mai) আমটি দেখতে কিছুটা সাদা বর্ণের। তবে, ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, সামাজিক মাধ্যমে যে ছবিগুলোকে ডকমাই আম বা হোয়াইট ম্যাংগো বলে দাবি করা হচ্ছে সেগুলো আসল নয় বরং, মাইক্রোসফট বিঞ্জ নামক একটি ইমেজ ক্রিয়েটর বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বানানো । উক্ত ছবিগুলোর নিচে বিঞ্জ এর একটি লোগো থাকায় বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। যেহেতু সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টে উল্লেখিত ডক মাই আম এর অস্তিত্ব আছে, কিন্তু এই পোস্টে থাকা আমের ছবিগুলো বাস্তব নয়, সেহেতু ফ্যাক্টওয়াচ ঐ পোস্টের দাবিকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে।
Image: Example of a viral Facebook post
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:
সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ডক মাই আমের ছবিগুলো যথাযথ কিনা তা যাচাই করতে ঐ ছবিগুলো নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি এবং বিভিন্ন ভাষায় কয়েকটি ফ্যাক্ট-চেকিং রিপোর্ট খুঁজে পাই। পর্তুগিজ সংবাদমাধ্যম অবজার্ভাডর এ প্রকাশিত Is the image showing a tree laden with white mangoes real? শিরোনামে একটি ফ্যাক্ট-চেকিং রিপোর্টে বলা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ছবির ফলগুলো সাদা বর্ণের আম বলে চিহ্নিত হয়েছে এবং সেগুলো আসল নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি। রিপোর্টটিতে আরও বলা হয়েছে, সাদা বর্ণের ঐ আমের ছবিগুলো DALL -E নামক একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম দিয়ে তৈরি যা কিনা কোন টেক্সট থেকে ছবি তৈরি করতে পারে। সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত সাদা বর্ণের আমের ছবিগুলোর নিচে বিঞ্জ এর লোগো দেখে জানা গেছে এগুলো বিঞ্জ ইমেজ ক্রিয়েটর দিয়ে তৈরি। উল্লেখ্য, মাইক্রোসফট বিঞ্জ DALL-E কৃ্ত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম এর সহায়তায় কাজ করে। কাজাখস্তান এর একটি ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা এর রিপোর্ট এবং রয়টার্স এর একটি ফ্যাক্ট-চেকিং রিপোর্ট সাদা আমের ছবিগুলো যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি তা নিশ্চিত করেছে।
Image: Excerpt from the Observador fact-checking report
Image: Microsoft Bing logo on the lower left of the photo
তাছাড়া, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত কিছু পোস্টের কমেন্ট বক্সে প্রদানকৃত সাদা আমের ছবিগুলোর উৎস হিসেবে আমাজন ইন্ডিয়া এর একটি লিংকে গিয়ে প্রাপ্ত ছবিগুলোর সাথে আগের ছবিগুলোর কোন মিল পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, ট্রপিকাল গ্রিন নামক একটি একটি ফল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেইজ এবং প্লান্ট প্যারাডাইজ নামক একটি ওয়েবসাইটে গোল্ডেন ডক মাই আম এর সন্ধান পাওয়া গেছে যা দেখতে কিছুটা সাদা বর্ণের।
Image: Golden Nam Dok Mai mango/Plant Paradise
অতএব, ডক মাই আম বা কিঞ্চিৎ সাদা বর্ণের আমের অস্তিত্ব আছে। তবে, সামাজিক মাধ্যমে যে সাদা বর্ণের আমের ছবিগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টের দাবিকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?