সম্প্রতি “ভারতীয় সব শ্রমিককে বরখাস্ত করে দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে আরব” শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে বলা হয়েছে ইয়েমেনি শেখ আলী হাসান আল-জামাল এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন। তাঁর অধীনে থাকা সকল ভারতীয়কে তিনি বরখাস্ত করেছেন এবং দেশে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটিতে যাকে ইয়েমেনি শেখ আলী হাসান দাবি করা হয়েছে সেই ব্যক্তিটি ইয়েমেন দেশের মারিব শহরের গভর্নর মেজর জেনারেল সুলতান আল আরাদা। অবশ্য আলী হাসান আল-জামাল নামে এক ব্যক্তির একটি টুইট পাওয়া যায়, যেখানে তিনি উল্লেখিত দাবিটি করেছিলেন। তবে টুইটটি খুব দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়লে তিনি তাঁর ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট করে জানান এটি ছিল তার প্রতীকী মন্তব্য। তিনি কোনো ব্যবসায়ী নন, এবং তাঁর অধীনে কোনো ভারতীয় শ্রমিক কাজ করে না। সুতরাং এমন শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
ভিডিওটিতে থাকা ব্যক্তির মুখাবয়ব রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা হলে ইয়েমেন দেশের মারিব শহরের গভর্নর মেজর জেনারেল সুলতান আল আরাদার সাথে মিল পাওয়া যায়। একাধিকবার পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ছবির ব্যক্তিটি মেজর জেনারেল সুলতান আল আরাদা। এ বিষয়ে আরও জানতে শেখ আলী হাসান আল-জামাল নামে টুইটারে অনুসন্ধান করলে Rizwan Najim নামের এক পাকিস্তানী নাগরিকের একাউন্ট থেকে প্রকাশিত একটি টুইট পাওয়া যায়। টুইটটি দেখুন এখানে। টুইটটিতে বলা হয়েছে , “This Canada-based Yemeni businessman, Ali Al Jamal fired all his Hindu Indian employees, gave them return tickets to India and vowed he won’t trade with India. Allhamdulillah Muslims are uniting to defend Prophet Muhammad (SAW).
এই টুইটে ব্যবহৃত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা হলে সেখানেও মেজর জেনারেল সুলতান আল আরাদার তথ্য আসছে। পরবর্তীতে ইয়েমেনি শেখ আলী হাসান আল-জামাল নামের কোনো অস্তিত্ব আছে কিনা জানতে বিস্তার অনুসন্ধান করে Ali AL Jamal নামের একটি টুইটার একাউন্ট পাওয়া যায়, যেখানে ৫ জুন ২০২২ তারিখে আরবিতে করা তাঁর একটি টুইট পাওয়া গেছে। টুইটটি দেখুন এখানে। টুইটটির অনুবাদ করে দেখা যায়, “I made the stays of all non-Muslim Indian workers and handed them all their dues along with return tickets without return, and I will stop all transactions and purchase of goods made in India and this is the weakest of faith”
এই টুইটটি খুব দ্রুত ভাইরাল হবার পরে জুন ৮ তারিখে তাঁর ফেসবুক একাউন্ট থেকে করা অন্য একটি পোস্ট পাওয়া যায়, পোস্টটি দেখুন এখানে ।
ফেসবুক পোস্টটিতে তিনি সুস্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, এই টুইটটি প্রতীকী, যেনো সামর্থবান মুসলিমরা কাজটি করতে অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকেন। উল্লেখ্য, Ali AL Jamal নামের এই ব্যবহারকারী তাঁর একাউন্টে ইয়েমেন দেশের মারিব শহরের গভর্নর মেজর জেনারেল সুলতান আল আরাদার ছবি ব্যবহার করেছেন।
মারিব শহরের গভর্নর মেজর জেনারেল সুলতান আল আরাদাকি নিয়ে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
সুতরাং একজনের ছবি অন্যজনের পরিচয়ে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা টুইটের সুত্র দিয়ে প্রকাশিত ভিডিওগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” চিহ্নিত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?