ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের চিফ হিট অফিসারের একটি বক্তব্যের বিভিন্ন বিকৃত রূপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গরম থেকে বাচতে চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন নাগরিকদের ঘরের বাইরে বের হওয়ার সময় ছাতা, পানির বোতল, বহনযোগ্য ফ্যান ইত্যাদি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে বুশরা আফরিনের খবরযুক্ত ফটোকার্ড বিকৃত করে অন্য অপ্রাসঙ্গিক জিনিস নিয়ে বাইরে বের হওয়ার পরামর্শ দেয়ার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রল করে এমনটা করা হয়েছে ভাবার সঙ্গত কারণ থাকলেও দাবদাহে এ ধরনের তথ্যবিকৃতি জনজীবনের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে বিধায় ফ্যাক্টওয়াচ এসব পোস্টকে বিকৃত সাব্যস্ত করছে।
গত ২১শে এপ্রিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন গণমাধ্যমের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে আমরা নিজেরা যদি সচেতন থাকি- আমরা যদি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে আমাদের ব্যাগে একটা পানির বোতল, টুপি, ফ্যান, ছাতার মতো জিনিসপত্র সঙ্গে রাখি তাহলে কিন্তু অনেকটাই নিরাপত্তা পেতে পারি।
এই সাক্ষাতকারের পরে কয়েকটি বহনযোগ্য ফ্যান বিক্রির প্রতিষ্ঠানকে তাঁর বক্তব্য উদ্ধৃত করে ফেসবুকে পোস্ট করতে দেখা যায়। যেমন –এখানে , এখানে ।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ভিন্ন কয়েকটি ফেসবুক পেজ চিফ হিট অফিসারের বক্তব্যকে বিকৃত করে তাদের নিজেদের পেজের পণ্য বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছে।
অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে dbcnews এ গত ২১শে এপ্রিল প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড এডিট করে এসব নতুন ফটোকার্ড তৈরি করা হয়েছে। মূল ফটোকার্ডের বক্তব্য ছিল- গরমে ছাতা নিয়ে বাইরে বের হতে বললেন হিট অফিসার। অন্যদিকে, এডিটেড ফটকার্ড গুলোতে ছাতার বদলে অন্য কোনো পণ্যের নাম বসিয়ে ( জার্সি, চিয়া সিড ইত্যাদি) ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে, কোনো ফটোকার্ড ছাড়াই পোস্ট আকারে চিফ হিট অফিসারের বিকৃত বক্তব্য পোস্ট করা হয়েছে।
গরম কমানোর জন্য চিফ হিট অফিসারের পরামর্শের বাইরে বিভিন্ন ডাক্তার এবং পেশাজীবীরা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে তাদের বক্তব্য জানিয়েছেন। যেমন – মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা আবু সাইদ শিমুল এর বাইরে বের হলে শিশুদের জন্য স্যালাইন সাথে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী হালকা সুতির পোষাক পরিধান করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে আলোচ্য ফেসবুক পেজগুলোকে তাদের পণ্যের পক্ষে সত্যিকারের কোনো বিশেষজ্ঞ মতামত প্রচার না করে চিফ হিট অফিসারের বক্তব্য বিকৃত করে নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে।
যেহেতু চিফ হিট অফিসারের মুল বক্তব্যের সাথে এসব বক্তব্যের মিল নেই, তাই এই বিকৃত বক্তব্যযুক্ত ফেসবুক পোস্টগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ বিকৃত হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।