সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সোনিয়া হাসানের স্বাক্ষরযুক্ত একটি প্রজ্ঞাপনে আগামী ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ এ অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ০৫ – ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ নির্বাচনকালীন ছুটির ঘোষণা দেয়া হয়েছে – এই মর্মে একটি ছবি শেয়ার হতে দেখা যাচ্ছে। তবে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, উক্ত প্রজ্ঞাপনটি ভুয়া। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ এ প্রকাশিত একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ০৫ – ০৮ জানুয়ারি নির্বাচনকালীন ছুটির ঘোষণার প্রজ্ঞাপনটিকে বানোয়াট হিসেবে অভিহিত করে এটিকে আমলে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, নির্বাচন উপলক্ষে কেবল ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ সাধারণ ছুটির ঘোষণাটি অপরিবর্তিত রয়েছে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত প্রজ্ঞাপনের দাবিকে মিথ্যা বলে সাব্যস্ত করছে।
সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত প্রজ্ঞাপনের দাবিটি সঠিক কিনা তা যাচাই করতে আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ এ প্রকাশিত ছুটি সংক্রান্ত একটি জরুরী বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পেয়েছি। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ০৫-০৮ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ ছুটি ঘোষণা সংক্রান্ত একটি বানোয়াট প্রজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে যা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নয়। উক্ত বানোয়াট প্রজ্ঞাপনটি আমলে না নেয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হলো।” অর্থাৎ, ০৫ – ০৮ জানুয়ারি তারিখ নির্বাচনকালীন সাধারণ ছুটির ঘোষণা সংবলিত যে প্রজ্ঞাপনটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হতে দেখা যাচ্ছে সেটা ভুয়া।
তাছাড়া, আলোচিত প্রজ্ঞাপনটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট অ্যাড্রেস ভুল লেখার পাশাপাশি বেশকিছু ভুল বানানও আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যা থেকে ধারণা করা যায়, উক্ত প্রজ্ঞাপনটি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশ করা হয়নি।
তবে, গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ এ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রজ্ঞাপনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে “০৭ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ রবিবার” সারাদেশে নির্বাচনকালীন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল, যা অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলাদেশের বেশকিছু মূলধারার সংবাদমাধ্যম নির্বাচনকালীন চারদিনের ছুটি সংক্রান্ত ভুয়া প্রজ্ঞাপনটি চিহ্নিত করে ইতিমধ্যেই সংবাদ প্রকাশ করেছে। সেগুলো পড়ুন এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত চারদিনের ছুটি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের দাবিটিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।