যা দাবি করা হয়েছে: আসন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। রাষ্ট্রের এ বাহিনীটি এবার বিরোধীদল বিএনপির পক্ষে রয়েছে ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী-লীগের বিপক্ষে রয়েছে।
ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত: দাবিটি মিথ্যা। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখনো কোনো দায়িত্ব পায়নি। বরং উক্ত দাবির সাথে যেই ভিডিও প্রচার হয়েছে, তা মূলত ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়ের। দায়িত্ব পেয়ে ২৪ ডিসেম্বর থেকে পহেলা জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৯দিন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করেছিল সেনাবাহিনী। দায়িত্ব পালনের সেই ভিডিও বর্তমানে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে কিনা জানতে একাধিক কী-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করা হয়। সেখান থেকে এমন কিছু পাওয়া যায়নি যা থেকে বোঝা যায়, সেনাবাহিনী আসন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন শুরু করেছে। তবে নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা কী থাকবে তা নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের একটি বক্তব্য পাওয়া গেছে। বক্তব্যটি নিচে দেয়া হলো:
“রবিবার (১৫ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের আগের সবগুলো জাতীয় নির্বাচনেই সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছিল। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। সেটাই তিনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল) বলেছেন”। দেশ রূপান্তর পত্রিকা থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আরও বিস্তারিত জানুন এখানে।
এ পর্যায়ে ভাইরাল ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের কিনা তা জানতে বিভিন্ন কী-ওয়ার্ড ধরে ইউটিউবে সার্চ করা হয়। সেখানে সময় টিভি থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে “নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন” শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে যেই ভিডিও ফুটেজগুলো ব্যবহার করা হয়েছে তার সাদৃশ্য হুবহু একই ভিডিও ফুটেজ বর্তমানে উক্ত দাবিতে ভাইরাল হয়েছে। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
সুতরাং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী এই দাবিটি ভিত্তিহীন। দাবিটির স্বপক্ষে যেই ভিডিও প্রচার হচ্ছে তা একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়ের।
উল্লেখ্য, নির্বাচনে সেনাবাহিনী বিএনপির পক্ষে রয়েছে ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী-লীগের বিপক্ষে রয়েছে এমন দাবি যাচাই যোগ্য নয়। তবে তথ্য-প্রমাণের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে এ ধরণের দাবির কোনো সুনিদিষ্ট উৎস নেই। বরং পুরনো ভিডিও এবং মিথ্যা ক্যাপশনের পাশাপাশি এমন দাবিগুলো করা হয়েছে।
তাই সার্বিক বিবেচনায় এই দাবিগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।