অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনকে জড়িয়ে ফেসবুকে একাধিক ফটোকার্ড সাম্প্রতিক সময়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব কার্ডে দাবি করা হচ্ছে, ভারতীয় একটি চলচ্চিত্রে সমকামী চরিত্রে বাঁধন অভিনয় করার কারনে তাকে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছে ‘ইসলামী ঐক্যজোট’। তবে অনুসন্ধানে ইসলামী ঐক্যজোটের বরাতে এমন কোনো বক্তব্য গণমাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমগুলোও জানাচ্ছে যে এই ফটোকার্ডগুলো ভুয়া।
দৈনিক প্রথম আলোর ফটোকার্ডের আদলে তৈরি করা এসব কার্ডে দাবি করা হয়েছে,ভারতীয় চলচ্চিত্রে সমকামী চরিত্রে অভিনয়ের কারণে অভিনেত্রী বাঁধনকে গ্রেফতারের দাবি ইসলামী ঐক্যজোটের।
দ্য ডেইলি স্টারের ফটোকার্ডের আদলে তৈরি করা অনুরূপ তথ্যযুক্ত ভিন্ন একটি ফটোকার্ডও ছড়াতে দেখা যাচ্ছে।
এছাড়া প্রথম আলোর লোগোযুক্ত ভিন্ন একটি ফটোকার্ডে দেখা যাচ্ছে, অভিনেত্রী বাঁধন বলছেন, আমাকে গ্রেফতার দাবি করার আগে মাদ্রাসাগুলো বন্ধ করুন, ওখানে বলাৎকার হয়।
অনুসন্ধান
দৈনিক প্রথম আলোর আদলে তৈরি করা ফটোকার্ডগুলোয় দেখা যাচ্ছে, এখানে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখটি উল্লেখ আছে। এই সূত্র ধরে দৈনিক প্রথম আলোর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গিয়ে উক্ত দুটি ফটোকার্ডের কোনোটিই দেখা গেল না। তবে এই পেজ থেকে ২৬শে সেপ্টেম্বর দুপুর ২ টায় প্রকাশিত একটি পোস্টে জানানো হচ্ছে যে প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই কার্ডটি ভুয়া ।
দ্য ডেইলি স্টার এর ভেরিফাইড পেজ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটে প্রকাশিত আরেকটি কার্ডে জানানো হয় যে ছড়িয়ে পড়া কার্ডটি ভুয়া।
এছাড়া,আজমেরী হক বাঁধন কে নিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের এমন কোনো দাবি দাওয়া উত্থাপনের কোনো সংবাদ মূলধারার গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডে ইসলামী ঐক্যজোটের সংবাদ সম্মেলনের যে ছবিটি ব্যবহৃত হয়েছে, সেখানে পেছনের ব্যানারে লেখা ছিল ‘ইসলামী ঐক্যজোটের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন’। অনুসন্ধানে দেখা গেল, এই ছবিটি দি ডেইলি ট্রিবিউনে ২০১৬ সালের ৭ই জানুয়ারি তারিখে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল- নতুন ঐক্য গড়ার ঘোষণা বিএনপি-ত্যাগী ইসলামী ঐক্য জোটের। এই সংবাদে বলা হয়- বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছেড়ে ইসলামী ঐক্য গড়ে তুলবে বলে জানিয়েছেন ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী।
একই দিনে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকাতেও একই অনুষ্ঠানের ছবি ছাপা হয়েছিল, তবে পিছনের ব্যানার একই থাকলেও সেখানে পোডিয়ামে ভিন্ন এক বক্তা উপবিষ্ট ছিলেন। এসকল প্রতিবেদনের কোথাও আজমেরী হক বাঁধন সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া গেল না। অর্থাৎ ইসলামী ঐক্যজোটের ৮ বছরের পুরনো ভিন্ন একটি ছবি সাম্প্রতিক দাবিতে এখানে ব্যবহৃত হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে , বা গণমাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে মাদ্রসায় সংঘটিত শিশু নির্যাতন নিয়ে তাকে কোনো বক্তব্য দিতে দেখা যায় নি।
সার্বিক বিবেচনায়, ফ্যাক্টওয়াচ এ সকল ভুয়া ফটোকার্ডযুক্ত পোস্টকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।
No Factcheck schema data available.
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh