ফেসবুকে গত কয়েকদিন ধরে “ইয়াসিন” নামে একজন অসুস্থ শিশুর ছবিসহ কিছু পোস্ট বিভিন্ন প্রোফাইল, পেজ ও গ্রুপ থেকে শেয়ার করা হয়েছে। পোস্টের বিবরণে দাবি করা হয়েছে, একজন অসহায় বাবা তার অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন। অর্থ সহায়তা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন পোস্টে ভিন্ন ভিন্ন বিকাশ এবং নগদ নম্বর দেওয়া হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, ছবির অসুস্থ শিশুটি বাংলাদেশের হলেও ঘটনাটি পাঁচ বছর আগের। ভারতের আর্থিক সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান কেটো-তে শিশুটির একই ছবি এবং অসুস্থতার বিবরণ পাওয়া গেছে। তাদের ওয়েবসাইটের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী চার বছর আগেই ভারতে শিশুটির চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া এই ফেসবুক পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, “ইয়াসিন” নামে শিশুটি চোখের ক্যান্সারে আক্রান্ত; তার চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন। সাহায্য প্রেরণের জন্য বিকাশ নাম্বারের পাশাপাশি যোগাযোগের ঠিকানা হিসেবে শিশুটির বাবার নাম “মোঃ উমর আলী” এবং কুষ্টিয়ার একটি ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে আর্থিক সহায়তা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন পোস্টে ভিন্ন ভিন্ন বিকাশ এবং নগদ নম্বর দেওয়া হয়েছে।
পোস্টে সংযুক্ত ছবিগুলো রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে দেখা যাচ্ছে, ভারতের আর্থিক সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান কেটো (Ketto)-তে একই ছবিগুলো পাঁচ বছর আগে পোস্ট করা হয়েছিল। বিবরণী থেকে জানা যাচ্ছে, তাজরিন নামক এই বাংলাদেশী শিশুটির বাবার নাম মোহাম্মদ জসিম। তাজরিন অরবিটাল র্যাবডোমায়োসারকোমা নামক একটি বিরল ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিল, যার ফলে তার বাম চোখ ফুলে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে।
ওয়েবসাইটে চার বছর আগে তার অবস্থা সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য হালনাগাদ করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ভারতে চিকিৎসা শেষে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে তাজরিন বাংলাদেশে তার বাড়িতে ফিরে গেছে এবং নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। উপরোক্ত তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, চার বছর আগে ক্যান্সার থেকে আরোগ্য লাভ করা শিশুর ছবি ব্যবহার করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করা হচ্ছে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এসব পোস্টকে “মিথ্যা” চিহ্নিত করছে।
Claim: ফেসবুকে গত কয়েকদিন ধরে “ইয়াসিন” নামে একজন অসুস্থ শিশুর ছবিসহ কিছু পোস্ট বিভিন্ন প্রোফাইল, পেজ ও গ্রুপ থেকে শেয়ার করা হয়েছে। পোস্টের বিবরণে দাবি করা হয়েছে, একজন অসহায় বাবা তার অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন। অর্থ সহায়তা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন পোস্টে ভিন্ন ভিন্ন বিকাশ এবং নগদ নম্বর দেওয়া হয়েছে।
Claimed By: Facebook Users
Rating: False
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh