বাগেরহাটে মুসলিম বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুনকে হিন্দু পল্লীর বলে প্রচার

56
বাগেরহাটে মুসলিম বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুনকে হিন্দু পল্লীর বলে প্রচার
বাগেরহাটে মুসলিম বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুনকে হিন্দু পল্লীর বলে প্রচার

সম্প্রতি বাগেরহাটের বিষ্ণুপুরে হিন্দু পল্লীতে আগুন দেওয়া হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২৩ সেকেন্ডের ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে হিন্দু পল্লীতে আগুন দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। মূলত, গত বুধবার (৮ জানুয়ারি, ২০২৪) বাগেরহাটে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষের সময় বিএনপির এক গ্রুপ বিরোধী পক্ষ শেখ রুহুল আমীনসহ তাদের আট ভাইয়ের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ভাইরাল ভিডিওটি এই ঘটনার।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভিডিওটি থেকে কিছু কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনে ঘটনাটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত বুধবার (৮ জানুয়ারি,২০২৪) বাগেরহাটে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ওইদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কুলিয়াদাইড় গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা মোল্লা মোস্তাফিজুর রহমান ও শেখ রুহুল আমীন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আটটি বাড়ি ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। অগ্নিসংযোগের শিকার বাড়িগুলো হলো বিএনপি নেতা শেখ রুহুল আমীনসহ তাদের আট ভাইয়ের। 

একই প্রতিবেদনে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি মোল্লা মোস্তাফিজুর রহমান গ্রুপের নেতা মাসুম মোল্লাকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। মাসুল মোল্লা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে আসার পথে শেখ রুহুল আমীন গ্রুপের লোকজন বিকালে আবারও হামলা চালান। এতে আমাদের পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময়ে রুহুল আমীন ভাইসহ আমাদের আট ভাইয়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও  লুটপাট করা হয়।’

একই ছবি পাওয়া যায় বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও। গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি,২০২৪) সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী-শিশুসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় আটটি বসতঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, অগ্নিসংযোগের শিকার বাড়িঘরগুলো শেখ রুহুল আমীন ও তার সাত ভাইয়ের। 

বাগেরহাটের বিষ্ণুপুরের এই ঘটনা নিয়ে দেশের অন্যান্য সংবাদমাধ্যমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। 

এসব প্রতিবেদন থেকে বাগেরহাটের বিষ্ণুপুরে হিন্দু পল্লীতে আগুন দেওয়া হয়েছে দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক হামলার সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

Claim:
সম্প্রতি বাগেরহাটের বিষ্ণুপুরে হিন্দু পল্লীতে আগুন দেওয়া হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

Claimed By:
Facebook Users

Rating:
False

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh