বায়তুল মোকাররম মসজিদের ইতিহাস নিয়ে যমুনা টিভির নামে ভুয়া ফটোকার্ড

114
বায়তুল মোকাররম মসজিদের ইতিহাস নিয়ে যমুনা টিভির নামে ভুয়া ফটোকার্ড
বায়তুল মোকাররম মসজিদের ইতিহাস নিয়ে যমুনা টিভির নামে ভুয়া ফটোকার্ড

বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম একটি হিন্দু মন্দিরের জায়গায় নির্মিত হয়েছে- একজন সনাতন ধর্মীয় নেতার বরাতে এমন দাবিযুক্ত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে যমুনা টিভি বা অন্য কোনো গণমাধ্যমে এমন কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডটিকে “মিথ্যা” তথ্য হিসেবে চিহ্নিত করছে।

গুজবের উৎস

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান


ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডে মূল শিরোনাম ছিল-  “এবার জাতীয় মসজিদ ‘বাইতুল মোকাররমকে’ রামের প্রাচীন ‘রত্নগিরি’ মন্দিরের জায়গায় নির্মিত বলে দাবি করলেন ইসকন নেতারা” । যমুনা টিভির লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডটির বামে বাইতুল মোকাররম মসজিদ, মাঝে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী এবং ডান পাশে একটি মন্দিরের ছবি দেখা যাচ্ছে। 

তবে যমুনা টিভির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ ‘Jamuna Television’  এ উক্ত ফটোকার্ডটি পাওয়া যায়নি।  যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ডগুলোর লেখার স্টাইলে দেখা যাচ্ছে তারা  শিরোনামে ‘দাড়ি’ বিরামচিহ্ন ব্যবহার করে না। তাছাড়া ইসকনের নেতাদের নামে ফেসবুকে ছড়ানো ফটোকার্ডে কোন তারিখের উল্লেখ নেই।  কিন্তু  যমুনা টিভির আসল ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাচ্ছে শিরোনামের নিচে ফটোকার্ডের ডানপাশে তারিখ লেখা থাকে।

এটা থেকে প্রমাণ হয় ফটোকার্ডটি যমুনা টেলিভিশনের না। উদাহরণস্বরুপ নিচে দেওয়া ফটোকার্ডটি দেখুন

“এবার জাতীয় মসজিদ ‘বাইতুল মোকাররমকে’ রামের প্রাচীন ‘রত্নগিরি’ মন্দিরের জায়গায় নির্মিত বলে দাবি করলেন ইসকন নেতারা” এইরকম কোন সংবাদ যমুনা টিভি সহ বাংলাদেশের মূলধারার কোন গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইসকন টিভি ঢাকা নামক আনভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকেও নিকট অতীতে এমন কোনো দাবি দেখা যাচ্ছে না। 


 তাই,ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতে অযোধ্যার বাবরী মসজিদ, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ সহ বিভিন্ন মুসলিম স্থাপত্যের ক্ষেত্রে অনেকে দাবি করছেন, প্রাচীণ হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপরে এই মসজিদগুলো গড়ে উঠেছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের সাথে রত্নগিরি মন্দিরের নাম জড়িয়ে ‘ট্রল’ হিসেবে এই ফটোকার্ড তৈরি করা হতে পারে।

বায়তুল মোকাররমের নির্মান ইতিহাস থেকে জানা যাচ্ছে, বর্তমান বায়তুম মোকাররমের স্থলে একটি বড় পুকুর ছিল, যা ‘পল্টন পুকুর’ নামে পরিচিত ছিল। পুকুরটি ভরাট করে ২৭ জানুয়ারি ১৯৬০ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান মসজিদের কাজের উদ্বোধন করেন।

অন্যদিকে , ভারতের তামিলনাড়ুর ভেলোরে Ratnagiri Murugan Temple অবস্থিত, যা চতুর্দশ শতকে নির্মিত হয়েছিল।

সিদ্ধান্ত

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যমুনা টেলিভিশন বায়তুল মোকাররম এবং রত্নগিরি মন্দির সম্পর্কিত কোন ফটোকার্ড প্রচার করেনি। তাছাড়া অনুরূপ বক্তব্য অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া যায়নি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডটিকে ‘মিথ্যা’ তথ্য হিসেবে চিহ্নিত করছে। 

No Factcheck schema data available.

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh