বঙ্গবাজারে আগুন লাগানো হয়েছে – পুরানো সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে ভূয়া দাবি

7
বঙ্গবাজারে আগুন লাগানো হয়েছে – পুরানো সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে ভূয়া দাবি বঙ্গবাজারে আগুন লাগানো হয়েছে – পুরানো সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে ভূয়া দাবি

Published on: [post_published]

গত ৪ই এপ্রিল ২০২৩ এ সন্ধ্যা ৭ টা ১৪ মিনিটে “Team with Riyad faruki” নামক ফেসবুক পেইজ থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। ভিডিওটির ন্যারেটর বা কথক প্রথমেই বলছেন যে বঙ্গবাজারে আগুন লাগেনি বরং কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আগুন লাগিয়েছে এবং তার এই মন্তব্যের প্রমাণ হিসেবে একটি সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজের দেখিয়েছেন। ফ্যাক্টওয়াচ ঐ ব্যবহৃত সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজটির উৎস খুঁজে বের করেছে এবং জানতে পেরেছে যে উক্ত ভিডিও ফুটেজটি প্রায় এক বছরের পুরনো। তাছাড়া, ভিডিওটিতে বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সের দোকান-মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদকের একটি বক্তব্যকে ভিডিওতে উল্লেখ করে তার ষড়যন্ত্র-তত্ত্বকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। ডেইলি স্টারকে দেওয়া বিএম হাবিবের বক্তব্যটি ছিলো একটি ধারণামাত্র এবং এখনও কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার উৎস বা কারণ কি ছিলো। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ উক্ত ফেসবুক পেইজে শেয়ারকৃত ভিডিওটিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে। 

এমন কিছু ফেসবুক পোস্টের নমুনা দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

“Team of Riyad faruki” নামক ফেসবুক পেইজ থেকে শেয়ারকৃত ভিডিওতে থাকা সিসিটিভি ফুটেজটির কিছু স্ক্রিনশট নিয়ে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করে আমরা ঐ ফুটেজটির একটি উৎস খুঁজে পাই। উক্ত সিসিটিভি ফুটেজটি গত ৯ই এপ্রিল ২০২২-এ “SKL-Oxotic” নামক ফেসবুক পেইজে শেয়ারকৃত তিন মিনিট ২২ সেকেন্ডের একটি ফুটেজের কিছু অংশ যার ক্যাপশনে bhoot, bhootha, bhootboss ইত্যাদি হ্যাশট্যাগ দেয়া ছে। অর্থাৎ, ফুটেজটি প্রায় এক বছরের পুরনো। উক্ত ফুটেজটিতে দেখা যায়, দুজন মোটরসাইকেল আরোহী কথিত ভূত দেখে পালিয়ে যাচ্ছে র সাথে গত ৪ই এপ্রিল ২০২৩ এ বঙ্গবাজারে আগুন লাগার কোন সম্পর্ক নেই। 

 

তাছাড়া, ফেসবুকে শেয়ারকৃত ভিডিওটির কথক বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সের দোকান মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক বিএম হাবিবের একটি বক্তব্যকে উল্লেখ করে বলছেন যে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার ঘটনাটি দুর্ঘটনা নয় বরং ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে। ৪ই এপ্রিল ২০২৩ এ বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পর মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক বিএম হাবিব দি ডেইলি স্টারকে বলেন যে, “আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আমরা সন্দেহ করছি এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। স্বার্থনেষী মহল দীর্ঘদিন ধরে এটি দখলের চেষ্টা করছে। আমরা সন্দেহ করছি যে তারা ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের জন্য আগুন লাগিয়েছে।” দি ডেইলি স্টারের সংবাদটি দেখুন এখানে। জনাব বিএম হাবিব এর উক্ত বক্তব্যটি তার ধারণামাত্র। বঙ্গবাজারে আগুন লাগার কারণ বা আগুনের উৎস কোথা থেকে তা এখনও জানা যায় নি৷ তবে, ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে শীতাতপ যন্ত্র থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। দেখুন এখানে

 

অতএব, ফেসবুক পেইজটির ভিডিওতে যে সিসিটিভি ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে, তা এক বছরের পুরনো একটি ফুটেজের অংশবিশেষ। পাশাপাশি, ভিডিওটিতে একজনের অনুমানপ্রসূত বক্তব্যের উপর মাধ্যমে যে ষড়যন্ত্র-তত্ত্ব (Conspiracy Theory) দাঁড় করানো হয়েছে, তাও ভিত্তিহীন। 

সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুক পেইজে শেয়ারকৃত ভিডিওটিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.