১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিকাশ সকল গ্রাহককে ১৫,০০০ টাকা করে বোনাস দিচ্ছে – এমন একটি পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এটি একটি আর্থিক প্রতারণার ফাঁদ বা স্ক্যাম। বিকাশ কর্তৃপক্ষ থেকে এমন কোনো ঘোষণা আসেনি। পোস্টের সাথে যে লিংকটি যুক্ত করা হয়েছে তাতে প্রবেশ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বিকাশের লোগো ব্যবহার করে বানানো ওয়েবসাইটটি ভুয়া এবং এর মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা ও তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বিকাশের ওয়েবসাইট এবং অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজের সাম্প্রতিক বিভিন্ন পোস্ট এবং অফার পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে তারা শীতকাল উপলক্ষে সীমিত কিছু দোকান এবং ই-কমার্সে নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্যছাড় অফার করছে। কিন্তু “১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সকল গ্রাহককে ১৫,০০০ টাকা বোনাস প্রদান” সংক্রান্ত কোনো অফার নেই।
এদিকে বিকাশ বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিলো ২০১১ সালের জুলাই মাসে, সে হিসেবে বিকাশের ১৫ বছর পূর্তি হওয়াও সম্ভব নয়।
পোস্টগুলোর সাথে সংযুক্ত লিংকে প্রবেশ করে দেখা যাচ্ছে, বিকাশের লোগোযুক্ত একটি ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। ওয়েবসাইটের শুরুতেই একাধিক ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে কমেন্ট করা হয়েছে যে তারা সবাই বিকাশ থেকে ১৫,০০০ টাকা বোনাস পেয়েছেন (ছবি ১)।
পরবর্তী ধাপে একটি ফর্ম পূরণ করতে বলা হয় যেখানে ‘আপনার বিকাশে বর্তমানে কতো টাকা রয়েছে’ এমন অযাচিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে (ছবি ২)। ফর্মটি জমা দেওয়ার পর ওয়েবসাইটটি ‘Liton Store’ নামক একটি বিকাশ পেমেন্ট গেটওয়েতে নিয়ে যায়, যেখানে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট নাম্বার, ওটিপি এবং পিনকোড চাওয়া হয়। এসব তথ্য সরবরাহ করলে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে পূর্বে উল্লেখিত পরিমাণ অর্থ কেটে নেওয়া হয়।
এ ওয়েবসাইটের কার্যপ্রক্রিয়া থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, এর সাথে প্রতারণামূলক ফিশিং লিঙ্ক সংযুক্ত রয়েছে যার মাধ্যমে গ্রাহকদের তথ্য ও টাকা প্রতারকদের হাতে চলে যাচ্ছে। কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারীর পোস্ট (১,২) পাওয়া যাচ্ছে যেখানে এই প্রতারণার ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে।
সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এসব পোস্টকে “মিথ্যা” চিহ্নিত করছে।
উল্লেখ্য,বিকাশ থেকে এমন ব্যক্তিগত এবং গোপনীয় তথ্য চাওয়া হয় না এবং সেগুলো কাউকে শেয়ার করতেও নিষেধ করা হয়। বিকাশ নিয়ে এসব প্রতারণা থেকে নিরাপদ থাকতে করণীয় বিষয়ে একটি আর্টিকেল পড়ুন এখানে।
Claim: ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিকাশ সকল গ্রাহককে ১৫,০০০ টাকা করে বোনাস দিচ্ছে – এমন একটি পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে।
Claimed By: Facebook Users
Rating: False
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh