প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সবাইকে ৫ হাজার টাকা করে বিকাশে উপহার দিচ্ছেন দাবিতে একটি পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এটি একটি প্রতারণামূলক ফাঁদ বা স্ক্যাম। বাংলাদেশ সরকার এবং বিকাশ কর্তৃপক্ষ থেকে এমন কোনো ঘোষণা আসে নি। পোস্টের সাথে যে ওয়েবসাইট লিংক যুক্ত করা হয়েছে তাতে প্রবেশ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বিকাশের লোগো ব্যবহার করে বানানো এই ভুয়া ওয়েবসাইটে ফিশিং(phishing) লিংকের মাধ্যমে বিকাশ গ্রাহকদের টাকা ও তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার মতোই এটি আরেকটা প্রচেষ্টা । তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “মিথ্যা” আখ্যা দিচ্ছে।
গুজবের উৎস
দিন তিনেক ধরে নতুন করে ফেসবুকে পোস্টটি ছড়াতে থাকলেও এ বছর জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ‘পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় খুশি হয়ে সবাইকে বিকাশে ৫০০০ টাকা উপহার দিচ্ছেন শেখ হাসিনা’ এবং ‘রমজান উপলক্ষে সবাইকে বিকাশে ৭৯৯৯ টাকা উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী’ এমন দাবিতেও গুজব ছড়িয়েছে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান
বিকাশের ওয়েবসাইট এবংঅফিশিয়ালফেইসবুক পেইজ অনুসন্ধান করে দেখা যাচ্ছে বিকাশ থেকে দেশের নাগরিকদের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিকাশে উপহার বা অনুদান দেওয়ার কোনো ঘোষণা আসে নি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েবসাইট, সরকারি সংবাদ সংস্থা বিএসএস-এর ওয়েবসাইট, জাতীয় গণমাধ্যম কোথাও এ ধরনের ঘোষণা আসে নি।
পোস্টগুলোর সাথে সংযুক্ত লিংকের বেশিরভাগই অকার্যকর হলেও কিছু লিংকে প্রবেশ করা যাচ্ছে এবং দেখা যাচ্ছে বিকাশের লোগোযুক্ত একটি ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। ওয়েবসাইটের শুরুতেই একাধিক ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ‘ভেবেছিলাম এটি রসিকতা কিন্তু আমি ও আমার পরিবারের আজ সকালে বিকাশে ৫০০০ টাকা পেয়েছি’ এ ধরনের চটুল মন্তব্য দেখিয়ে প্রলোভিত করার চেষ্টা করা হয়েছে (ছবি ১)।
ছবি১
পরবর্তী ধাপে একটি ফর্ম পূরণ করতে বলা হয় যেখানে ‘আপনার বিকাশে বর্তমানে কতো টাকা রয়েছে’ এমন অযাচিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে (ছবি ২)। এ ওয়েবসাইটের কার্যপ্রক্রিয়া থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, এর সাথে প্রতারণামূলক ফিশিং লিঙ্ক সংযুক্ত রয়েছে যাতে ক্লিক করলে গ্রাহকদের তথ্য ও টাকা প্রতারকদের হাতে চলে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি২
সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।