আসন্ন শবে বরাত উপলক্ষে দেশের সবাইকে বিকাশে ৫,৩০০ টাকা করে সরকারি অনুদান দিচ্ছে – এমন একটি পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এটি একটি আর্থিক প্রতারণার ফাঁদ বা স্ক্যাম। বিকাশ কর্তৃপক্ষ থেকে এমন কোনো ঘোষণা আসেনি। পোস্টের সাথে যে লিংকটি যোগ করা হয়েছে তা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বিকাশের লোগো ব্যবহার করে বানানো ওয়েবসাইটটি ভুয়া এবং এর মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা ও তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
গুজবের উৎস
২৯ জানুয়ারি থেকে ফেসবুকে এই তথ্য ছড়াতে থাকে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
বিকাশের ওয়েবসাইট এবং অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ অনুসন্ধান করে দেখা যাচ্ছে, বিকাশ থেকে শবে বরাত উপলক্ষে দেশের নাগরিকদের সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা আসেনি। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ওয়েবসাইট, অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এমনকি মূলধারার গণমাধ্যম থেকেও এ ধরনের ঘোষণা পাওয়া যায়নি।
পোস্টগুলোর সাথে থাকা লিংকে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, বিকাশের লোগোযুক্ত একটি ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। ওয়েবপেইজের শুরুতে শিরোনাম হিসেবে “শবে বরাতে সরকারের বিশেষ উপহার” লেখা রয়েছে।
পরবর্তী ধাপে একটি ফর্ম পূরণ করতে বলা হয় যেখানে ‘আপনার বিকাশে বর্তমানে কতো টাকা রয়েছে’ এমন তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। ফর্মটি জমা দেওয়ার পর ওয়েবসাইটটি “Sagor Enterprise” নামক একটি বিকাশ পেমেন্ট গেটওয়েতে নিয়ে যায়, যেখানে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট নাম্বার, ওটিপি এবং পিনকোড চাওয়া হয়। এসব তথ্য সরবরাহ করলে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে পূর্বে উল্লেখিত পরিমাণ অর্থ কেটে নেওয়া হয়।
এ ওয়েবসাইটের কার্যপ্রক্রিয়া থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, এর সাথে প্রতারণামূলক ফিশিং লিঙ্ক রয়েছে যাতে ক্লিক করলে গ্রাহকরা আর্থিক প্রতারণার ঝুঁকিতে পড়ছেন।
সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এই তথ্যকে “মিথ্যা” চিহ্নিত করছে।
উল্লেখ্য,বিকাশ থেকে এমন ব্যক্তিগত এবং গোপনীয় তথ্য চাওয়া হয় না এবং সেগুলো কাউকে শেয়ার করতেও নিষেধ করা হয়। বিকাশ নিয়ে এসব প্রতারণা থেকে নিরাপদ থাকতে করণীয় বিষয়ে একটি আর্টিকেল পড়ুন এখানে।
Claim: আসন্ন শবে বরাত উপলক্ষে দেশের সবাইকে বিকাশে ৫,৩০০ টাকা করে সরকারি অনুদান দিচ্ছে – এমন একটি পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে।
Claimed By: Facebook Users
Rating: False
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh