যা দাবি করা হচ্ছেঃ জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান।
অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছেঃ দাবিটি মিথ্যা। কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি মামলায় বিএনপির নেতা আমান উল্লাহ আমানকে জামিন দিয়েছে আদালত। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, আমান উল্লাহ আমান জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা ২০০ মামলার মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে ১৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত মামলাটি বাদে বাকি সব কয়টিতে তিনি জামিনে রয়েছেন। কিন্তু, এই একটি মামলায় জামিন না হলে তার কারামুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তার পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম। অর্থাৎ, আমান উল্লাহ আমান এখনও জামিনে মুক্ত নন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:
বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান সত্যিই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে এনটিভির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গত ১০ জানুয়ারি প্রকাশ করা একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। সেখান থেকে জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের এক মামলায় বিএনপির নেতা আমান উল্লাহ আমান আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন। সেখানে আমান উল্লাহ আমানের পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলামের বরাত দিয়ে জানানো হয়, “এর আগে এ মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তার জামিন বাতিল হয়। আজকে (গত ১০ জানুয়ারি মঙ্গলবার) আমরা আবারও তার জামিনের আবেদন করি। আদালত শুনানি শেষে তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন”।
পরবর্তিতে, বাংলা ট্রিবিউনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গত ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আমান উল্লাহ আমানের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলামের আরও কিছু বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়। সেখান থেকে জানা যায় যে, আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে দুই শতাধিক মামলা দায়ের করা ছিল, যেগুলোর মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে ১৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত একটি মামলা বাদে বাকি সব কয়টি মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। কারামুক্ত হতে হলে তাকে এই মামলা থেকে জামিন পেতে হবে।
দুর্নীতির এই মামলাটি গত ১৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগে তার জামিন শুনানির জন্য ধার্য করা ছিল। সেই দিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই সংক্রান্ত শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ৬ মার্চ জরুরি অবস্থার মধ্যে আমান উল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালত আমানকে ১৩ বছর এবং সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়। ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সাবেরা আমান এই মামলা থেকে জামিন পেয়েছিলেন।
সুতরাং ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।