সাম্প্রতিক সময়ে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খবরের আদলে ইসরায়েলে হামাসের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ইসরায়েলের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর – এমন একটি খবর পাওয়া যাচ্ছে ফেসবুকে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এ সংবাদটি ভিত্তিহীন এবং প্রথম আলোসহ কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো সংবাদ প্রচারিত হয় নি। প্রথম আলো ইতোমধ্যে তাদের ফেসবুক পেইজ থেকে জানিয়েছে এ প্রতিবেদনের ছবিটি নকল। পরবর্তী অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে যে প্রথম আলোর ৫ অক্টোবরের একটি প্রতিবেদনের ছবি এডিট করে এ নকল ছবিটি বানানো হয়েছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ ছবিকে বিকৃত আখ্যা দিচ্ছে।
গুজবের উৎস
গত ৮ অক্টোবর থেকে ফেসবুকে পোস্টটি পাওয়া যাচ্ছে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান
প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে সাম্প্রতিক তারিখের সংবাদগুলো অনুসন্ধান করে এ ধরনের কোনো সংবাদের অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি। এদিকে প্রথম আলো ৯ অক্টোবর তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে নিশ্চিত করেছে যে এ ছবি ও সংবাদটি নকল, এবং তাদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া প্রচারণা।
ইসরায়েলে হামাসের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুক্ত্ররাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন – এ দাবির সত্যতা জানতে মূলধারার গণমাধ্যম, বিএনপির ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ, বিএনপির ভেরিফাইড মিডিয়া সেল পেইজ এবং বিএনপি সমর্থক অন্যান্য ফেসবুক পেইজ সন্ধান করা হলে এ দাবির সপক্ষে কিছু পাওয়া যায়নি।
এদিকে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ৫ অক্টোবর প্রকাশিত “প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা থেকে খালি হাতে ঘুরে এসেছেন : মির্জা ফখরুল” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে। ভুয়া ছবি এবং এই প্রতিবেদনের ছবি তুলনা করে দেখা যাচ্ছে – দুটো প্রতিবেদনের শিরোনাম ও সময়, তারিখ ভিন্ন, এবং ভুয়া ছবিতে প্রতিবেদকের স্থান উহ্য। দুটো প্রতিবেদনে একই ছবি ব্যবহৃত হয়েছে এবং মূল প্রতিবেদনে ছবির ক্যাপশনে কয়েকটি শব্দ বদলিয়ে ভুয়া ছবিতে একই ক্যাপশন ব্যবহার করা হয়েছে বলে দুটো ক্যাপশনের মধ্যে সাদৃশ্য স্পষ্ট।
সার্বিক বিবেচনায় প্রতীয়মান হচ্ছে যে প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনের ছবি কম্পিউটারে সম্পাদিত করে ভুয়া প্রতিবেদনটি বানানো হয়েছে। সুতরাং ফ্যাক্টওয়াচ এ ছবিকে বিকৃত সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।