সম্প্রতি “এবার বরগুনার সেই পুলিশের পাশে দাঁড়ালেন সেনাবাহিনী” ক্যাপশনে একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভাইরাল ভিডিওটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ফুটেজ জোড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ২৭ মে ২০২২ তারিখে তৎকালীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে একটি বক্তৃতা দেন। ভাইরাল ভিডিওটির শুরুর অংশে উক্ত বক্তৃতার কিছু অংশ জোড়া দেয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে এমন ধারণা ছড়ানো হচ্ছে যে, সেনাবাহিনী বরগুনার পুলিশের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছে!
মিথ্যা ক্যাপশনে ফেসবুকে প্রকাশিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
৮ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের ভাইরাল ভিডিওটি দেখে বোঝা যায়, ভিন্-ভিন্ন সময়ের দুটি ভিডিও ফুটেজের সাহায্যে এটি তৈরি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৫ আগস্ট ২০২২ তারিখে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের উপরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ঘটনাটি নিয়ে সারাদেশ আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন গুজব ছড়াতে থাকে। “বরগুনার সেই পুলিশের পাশে দাঁড়ালেন সেনাবাহিনী” শিরোনামে ৮ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের ভিডিওটি তেমন একটি গুজব।
গুজবটিতে ব্যবহৃত ভিডিও ফুটেজগুলোর উৎস অনুসন্ধান করতে বিভিন্ন কী-ওয়ার্ডের সাহায্যে নিয়েছে ফ্যাক্টওয়াচ।
২৭ মে ২০২২ তারিখে তৎকালীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীনের একটি বক্তব্য ‘যুদ্ধ করতে চান? ৩০ মিনিটও টিকবেন না’ শিরোনামে ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করেছে চ্যানেল ২৪। পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বক্তৃতাটি দিয়েছেন। মুলত ভাইরাল ভিডিওটি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীনের সেদিনের বক্তব্যের ছোট অংশ ব্যবহার করেছে। সেই বক্তব্যটি কাদের উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে, বিষয়টি ঐ ছোট ফুটেজে আসে নি। চ্যানেল ২৪ থেকে প্রকাশিত ভিডিওটি দেখুন এখানে।
ভাইরাল ভিডিওটির ৪৫ সেকেন্ড অংশে যে ভিডিওটি দেখানো হয়েছে, সেটি “আওয়ামী-লীগের হুঁশিয়ারি, মাঠে নামলাম-খেলা হবে। মুখোমুখি সাবেক আইজিপি, মন্ত্রী ও সাংবাদিক” শিরোনামে আগস্ট ১৭ ২০২২ তারিখে ‘Face the people’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে। ভার্চুয়াল টকশোটিতে ১৫ আগস্ট ২০২২ তারিখে পুলিশের লাঠিচার্জের বিষয়টির উপরে বিভিন্ন আলোচনা করা হয়েছে। ভিডিওটি দেখুন এখানে।
অর্থাৎ ভাইরাল ভিডিওটি যে দুটি ভিডিও ফুটেজের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে তার সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
সুতরাং ভিত্তিহীন ক্যাপশনে প্রকাশিত ভিডিওগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?