সম্প্রতি ইফতার আয়োজনকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই দলের মধ্যে ঝগড়ার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি অনুসন্ধান করা হলে, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সালে “Abdullah Al Mamun Chowdhury” নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে এর সন্ধান পাওয়া যায়। তবে মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে এই ভিডিও সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া ইফতার আয়োজন নিয়ে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোনো সংঘাতের খবরও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই পুরানো ভিডিওটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করছে।
“ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঐতিহ্যবাহী টেটা যুদ্ধ” শিরোনামে ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দাবি করা হয়, ইফতারি আয়োজনকে কেন্দ্র করে শুরু হয় ভয়ানক ঝগড়া এবং সেখানে শতাধিক পুলিশ আহত হন। সম্পূর্ণ ভিডিওতে একটি ফসলী জমিতে একাধিক গ্রুপের মারামারি দেখা যায়। সেসময় তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রও দেখা যায়। এক পর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতিও নজরে আসে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
ভাইরাল ভিডিও থেকে নেয়া স্থিরচিত্রের মাধ্যমে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে প্রাসঙ্গিক কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। “Abdullah Al Mamun Chowdhury” নামের এই চ্যানেল থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ এ “ব্রাহ্মণবাড়িয়া brahmanbaria” শিরোনামে ভিডিওটি প্রকাশিত হয়।
৬ মিনিট ২ সেকেন্ডের ভিডিওর সাথে বর্তমানে ভাইরাল ভিডিওটির অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যা বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারা যায় যে দুইটি ভিডিও একই ঘটনারই।
এছাড়াও ২০২০ সালের ভিডিওতে সাপ্তাহিক রূপালী ধারা নামের একটি লোগো দেখতে পাওয়া যায়। এই নামের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সন্ধান পাওয়া যায়। তবে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য না থাকায় ভিডিওটি সম্পর্কে উক্ত পত্রিকার কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি মূলধারার বিভিন্ন গণমাধ্যমে খোঁজ করা হলেও এই ভিডিওটি সম্পর্কে বিস্তারিত খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ভিডিওটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য না থাকলেও এটি প্রমাণিত যে এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয়। দুই বছরেরও বেশি আগের।
অন্যদিকে ইফতার নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে কোনো ঝামেলা হয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা করা হলে, দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে এমন কোনো খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া শতাধিক পুলিশ আহতের কোনো খবরও মিলেনি।
সুতরাং, বিষয়টি পরিষ্কার যে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ভাইরাল এই ভিডিওর দাবির পিছনেও কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাই এমন ফেসবুক পোস্টগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?