সম্প্রতি “এই মাত্র/৮ হাজার কোটি টাকা আত্মসাত/জ্বালানি মন্ত্রীর গোপন কল রেকর্ড ফাঁস” ক্যাপশনে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। মূলত ভিডিওটিতে ব্যবহৃত কল রেকর্ডটি ‘ডিবিসি নিউজের’ ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে ‘ডিবিসি নিউজ’ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে, ফোনকলে তিনি নানা কারণ ব্যক্ত করেন। বর্তমানে সেই ফোনকলটি “জ্বালানি মন্ত্রীর গোপন কল রেকর্ড ফাস” শিরোনামে ভাইরাল করা হয়েছে। তার সাথে অন্য আরেকটি ভিডিও জোড়া দিয়ে এই ভিডিওটি বানানো হয়েছে। সম্প্রতি জ্বালানি মন্ত্রীর গোপন কল রেকর্ড ফাঁসের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মিথ্যা ক্যাপশনে ফেসবুকে প্রকাশিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে।
বিভিন্ন কী-ওয়ার্ডের সাহায্যে ফেসবুকে অনুসন্ধান করে ফ্যাক্টওয়াচ দেখেছে, “বিপিসিকে দেউলিয়া হবার হাত থেকে বাঁচাতেই দাম বাড়ানো হয়েছে: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।“ এমন শিরোনামে ৬ আগস্ট ২০২২ তারিখে ডিবিসি নিউজ সংবাদমাধ্যম থেকে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিও প্রতিবেদনটির শুরুতে বলা হয়েছে, “জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় না করলে বিপিসি দেউলিয়া হয়ে যাবে, তাই নিরুপায় হয়ে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সকালে ডিবিসি নিউজকে টেলিফোনে এমনটাই জানিয়েছেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ”।
প্রতিবেদনটির ১৫ সেকেন্ড অংশ থেকে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, “বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কতটুকু কমছে? একশ সত্তর থেকে একশ চল্লিশ ডলার হয়েছে। ১৪০ ডলার হিসেবে আমার তেল পড়ে ১২২ টাকা, সেখানে আমি ১১৪ টাকায়। আপনাদের কাছে আছে সে হিসাব? নাই। আমাকে এডজাস্টমেন্ট করতে হবে তো। বিপিসি আট হাজার কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে, নিজের পকেট থেকে। দেউলিয়া হয়ে যাবে দুদিন পরে। আমি ইমপোর্ট করতে পারলাম না হাহাকার নেমে গেলো, হাহাকার থেকে দাম বাড়ানো বেটার না? তো আমি
প্রসঙ্গত, ডিবিসি নিউজকে জ্বালানি মন্ত্রীর টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারটির প্রথমাংশের ১৬ সেকেন্ড পরবর্তীতে “জ্বালানি মন্ত্রীর গোপন কল রেকর্ড ফাস” শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। যার মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে।
ভাইরাল ভিডিওটির ১৬ সেকেন্ড পরবর্তী অংশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের একটি বক্তব্য দেখানো হয়েছে, ৬ আগস্ট ২০২২ তারিখে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র দলীয় কর্মীদের সামনে তুলে ধরেন।
“দেশরত্ন শেখ হাসিনার উন্নয়ন বার্তা বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে: জয়” শিরোনামে ভিডিওটি সমকাল পত্রিকার ইউটিউবে চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে। আল নাহিয়ান খান জয়ের বক্তব্যের পরবর্তী অংশ থেকে ভাইরাল ভিডিওটিতে বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও যোগ করা করে ৮ মিনিট ২৫ সেকেন্ড দীর্ঘায়িত করা হয়েছে।
অর্থাৎ ফেসবুকে ভাইরাল ৮ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের ভিডিওটি জ্বালানি মন্ত্রীর ফোনকল সাক্ষাৎকার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের ভিন্ন প্রাসঙ্গিক বক্তব্যকে জোড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যেখানে জ্বালানি মন্ত্রীর গোপন কল রেকর্ড ফাসের কোনো ঘটনা নেই।
সুতরাং ভিত্তিহীন ক্যাপশনে প্রকাশিত ভিডিওগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিকৃত” সাব্যস্ত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?