সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং এবং তাপদাহের কারণে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। তার মাঝেই সামাজিক মাধ্যমে চাউর হয়েছে একটি নতুন খবর। ওমান থেকে টন টন কয়লাভর্তি ৭৭টি বিশাল জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেছে। স্বস্তির খবরই বটে! তবে, এই স্বস্তি বেশিক্ষণ রইলো না, যখন খোদ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হল যে, ওমান থেকে টন টন কয়লা আসার খবরটি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। উক্ত মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন এর বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করা হয়। যেহেতু ওমান থেকে কয়লা আসছে না, সেহেতু ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
ওমান থেকে ৭৭টি জাহাজভর্তি কয়লা আসছে কিনা তা যাচাই করতে আমরা প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে গুগল সার্চ করি এবং বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোর বেশকিছু সংবাদ খুঁজে পাই। জাগো নিউজ ২৪, সময় নিউজ, কালের কন্ঠ, সাম্প্রতিক দেশকাল প্রভৃতি সংবাদমাধ্যমগুলোর সংবাদ পড়ে জানা গেছে যে, বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে ওমান থেকে “৮৫ লাখ ৯২ হাজার ৮৯৫ মেট্রিক টন” কয়লাভর্তি ৭৭টি জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার খবরটি মিথ্যা। উক্ত সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের সংবাদে ব্যবহৃত তথ্যের উৎস হিসেবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিকে উল্লেখ করেছে। পরবর্তীতে উক্ত মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে গিয়ে দেখা গেছে ৬ জুন ২০২৩ এ সন্ধ্যা আটটা ৪৫ মিনিটে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে এবং বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওমান থেকে ৭৭টি জাহাজ ভর্তি কয়লা আসার খবরটি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। বিজ্ঞপ্তিটিতে আরও বলা হয়েছে, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লা আসবে ইন্দোনেশিয়া থেকে এবং আগামী ২৪ জুন তা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এসে পৌঁছাবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ওমান এবং কাতার থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করছে বিগত কয়েক বছর ধরে। পড়ুন এখানে এবং এখানে।
অতএব, এই বিষয়টি এখন স্পষ্ট যে, ওমান থেকে জাহাজভর্তি কয়লা আসার খবরটি সঠিক নয়।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত পোস্টগুলোর দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।