সম্প্রতি ফেসবুক ও থ্রেডসে দুই ব্যক্তির মৃতদেহের ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে, তারা দুই ভাই টাঙ্গাইল জেলার বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সদস্য। আরও বলা হচ্ছে, মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের প্রতিবাদে মানব বন্ধন করায় এই দুই ভাইকে বিএনপি এবং জামাত শিবিরের লোকজনেরা বাসা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় ; তাদের পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি এবং তার দুই দিন পরে তাদের লাশ জেলা পরিষদের পাশে বিলে পাওয়া যায়। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, নিহতরা হলেন, জাফরগঞ্জ গ্রামের হাজী আলি মেম্বার বাড়ির মৃত দুলু মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (৩২) ও খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার সুকেন্দ্রপাড়ার রুহুল আমিনের ছেলে মোহন মিয়া (৩৫)। তারা দুজনেই স্থানীয় একটি ক্যাবল নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। গত বছরের ডিসেম্বরে তাদের মৃতদেহ পাওয়া যায় কুমিল্লার দেবিদ্বারের দোয়াই জলা বিল থেকে।
ফেসবুক পোস্টের সঙ্গে থাকা দুই ব্যক্তির মৃতদেহের ছবিতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বরের একটি পোস্ট পাওয়া যায়। এই পোস্টের ছবির সঙ্গে থাকা ক্যাপশনে বলা হয়, কুমিল্লার দেবিদ্বারের জাফরগঞ্জ এলাকায় একটি বিলের মধ্যে অজ্ঞাত দুইজন যুবকের মরদেহ পড়ে রয়েছে। এই পোস্টের শেয়ার ও কমেন্ট থেকে এই ধারণা পাওয়া যায় যে, সেই সময়ে এটি একটি আলোচিত ঘটনা ছিল।
ঘটনা টাঙ্গাইলের নয় কুমিল্লার জানার পরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে দেশের মূলধারার সংবাদ মাধ্যমের অনেকগুলোতে এ ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বরে প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নিহত দুজন হলেন দেবীদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ গ্রামের প্রয়াত দুলু মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (৩০) এবং খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার সুখাকেন্দ্রায় গ্রামের রহুল আমিন মিয়ার ছেলে মোহন মিয়া (৩৫)। আরোও জানা যায় যে, তারা দুই ভাই নন। প্রতিবেদনটিতে পুলিশের বরাতে বলা হয়, দুই যুবকের মরদেহে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে মরদেহের পাশে মাদক সেবনের সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। এ জন্য তারা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হতে পারছেন না, তারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, নাকি অন্য কোনো কারণে মারা গেছেন। পরিবারের সদস্যদের বরাতে বলা হয়, তারা ইন্টারনেট ও ডিস বিল তোলা, সংযোগ ও মেরামতের কাজ করতেন।
কালবেলায় দুই যুবকের মৃতদেহের ছবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন এবং পুলিশ, পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, এলাকাবাসীর বিবরণ থেকে নিহত দুই ব্যক্তির সঙ্গে হিন্দুধর্মের বা মন্দিরে হামলা জনিত কোনো সম্পর্ক ছিল বলে জানা যায় না।
ফলে, সঙ্গত কারণে, ফেসবুকে এবং থ্রেডসে উল্লেখিত ক্যাপশনের বক্তব্যগুলিতে সত্য খুঁজে না পাওয়ার কারণে, পোস্ট গুলিকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করা হল।
Claim: সম্প্রতি ফেসবুক ও থ্রেডসে দুই ব্যক্তির মৃতদেহের ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে, তারা দুই ভাই টাঙ্গাইল জেলার বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সদস্য। আরও বলা হচ্ছে, মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের প্রতিবাদে মানব বন্ধন করায় এই দুই ভাইকে বিএনপি এবং জামাত শিবিরের লোকজনেরা বাসা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় ; তাদের পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি এবং তার দুই দিন পরে তাদের লাশ জেলা পরিষদের পাশে বিলে পাওয়া যায়।
Claimed By: Facebook & Threads User
Rating: False
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh