কোটা আন্দোলন নিয়ে তারেক রহমান ও ঢাবি প্রো ভিসির ভাইরাল কথোপকথনটি পুরোনো

46
কোটা আন্দোলন নিয়ে তারেক রহমান ও ঢাবি প্রো ভিসির ভাইরাল কথোপকথনটি পুরোনো
কোটা আন্দোলন নিয়ে তারেক রহমান ও ঢাবি প্রো ভিসির ভাইরাল কথোপকথনটি পুরোনো

সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের একটি কথোপথকনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে তারেক রহমানকে অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে কোটা আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। ফেসবুকের কোনো কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি গত বছর সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে গড়ে উঠা জুলাই আন্দোলনের সময়কার। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এটি ২০১৮ সালের প্রথম পর্যায়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের। 

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ফেইস দ্য পিপল-মুখোমুখির ফেসবুক পেজে দাবি করা হয়েছে, ‘তারেক রহমানের সাথে ঢাবির প্রো ভিসি ড. মামুন আহমেদের কথোপকথন ফাঁস, জুলাই আন্দোলনের সময় যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তারেক।’ ভিডিওটি পোস্ট করে ঢাকা পোস্ট যায়যায়দিন লিখেছে, তারেক রহমানের সঙ্গে ঢাবি উপ-উপাচার্যের কথোপকথন ফাঁস। কথোপকথনটি কখনের সে ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই ফেসবুক পোস্টগুলোতে।

ভিডিওটি যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে ‘রিপোর্টার রাফি (RePoRtEr RaFi)’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে হুবহু একই কথোপকথনের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল চ্যানেলটিতে পোস্ট করা হয়। এটি একাত্তর টিভির টকশোর একটি ফুটেজ। একাত্তর টিভির ইউটিউব বা ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ফুটেজটিতে অধ্যাপক মামুন আহমেদকে কথোপকথনের বিষয়টি স্বীকার করতে শোনা যায়।

এই ভিডিওর সূত্রে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ঢাবি শিক্ষকের সঙ্গে তারেক রহমানের কথোপকথন (অডিও)‘ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল দেশের বাইরে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী সাদা দলের শিক্ষকদের সমর্থন দিতে বলেছেন। এদিন টেলিফোনে বিষয়টি সমন্বয়ের দায়িত্ব দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন আহমেদকে। প্রতিবেদনটিতে সম্প্রতি ভাইরাল  কথোপকথনটি হুবহু তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউন প্রতিবেদনটিতে জানায়,  অধ্যাপক মামুন আহমেদ তারেক রহমানের সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনের কাছে স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ওইদিন সন্ধ্যার পর তারেক রহমানের সঙ্গে তার কথা হয়।

ওই সময়ে আরও বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমেও তারেক রহমানের এই কথোপকথনটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন বিডিনিউজ২৪, যমুনা টিভি, জাগোনিউজ২৪

এসব তথ্যের ভিত্তিতে এটি স্পষ্ট যে, সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের একটি কথোপথকনের ভাইরাল ভিডিওটি দেশে সংগঠিত সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে গড়ে উঠা প্রথম পর্যায়ের আন্দোলনের। সে সময় থেকেই ভিডিওটি ইন্টারনেটে বিদ্যমান। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে এই ভিডিওটিই সময় উল্লেখ না করে নতুনভাবে উপস্থাপন করায় ফ্যাক্টওয়াচের যাচাইয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা দেখা গেছে।

তাই ফ্যাক্টওয়াচ সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

সংবাদমাধ্যমের ফেসবুকপেজসহ অন্যান্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

Claim:
সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের একটি কথোপথকনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে তারেক রহমানকে অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে কোটা আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। ফেসবুকের কোনো কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি গত বছর সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে গড়ে উঠা জুলাই আন্দোলনের সময়কার।

Claimed By:
Facebook users

Rating:
False

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh