সম্প্রতি “ফেনীতে হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন ৫ সদস্যের পুরো পরিবার” শিরোনামে একটি খবর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, “সময়ের কন্ঠস্বর” নামে একটি ওয়েবপোর্টালের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট থেকে ২০ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে এমন একটি খবর প্রকাশিত হয়। সেখানে একটি এফিডেভিটের ছবিসহ একটি পরিবারের ছবিও দেখতে পাওয়া যায়। এই ওয়েবপোর্টাল ছাড়া অন্য কোথাও এমন খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে এটি নিশ্চিতভাবেই বলা যাচ্ছে যে, খবরটি কমপক্ষে প্রায় চার বছর আগের। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এমন একটি খবরকে “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
“Daily Horodom News” নামে একটি ওয়েবপোর্টালের বরাতে ফেনীতে ৫ সদস্যের একটি পরিবারের ধর্মান্তরিত হওয়ার খবরটি ভাইরাল হচ্ছে। উক্ত প্রতিবেদনে কোনো তারিখ উল্লেখ না থাকলেও সেখানে উল্লেখিত দাবিটির সময় হিসেবে “বৃহস্পতিবার” এর উল্লেখ রয়েছে। যা থেকে ঘটনাটি সাম্প্রতিক এমন একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
ভাইরাল এই ফেসবুক পোস্টের থাম্বনেইলে একটি ছবি দেখতে পাওয়া গেলেও মূল প্রতিবেদনে ছবিটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে গুগল অনুসন্ধানে ২০ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সামনে আসে। “ফেনীতে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন ৫ সদস্যের পুরো পরিবার” শিরোনামে “সময়ের কন্ঠস্বর” নামক একটি ওয়েবপোর্টালের এই প্রতিবেদনে থাকা ছবির সাথে ফেসবুকে ভাইরাল পোস্টে থাকা থাম্বনেইলের ছবির মিল দেখা যায়। উভয় ছবিতেই “সময়ের কন্ঠস্বর” লিখিত একটি জলছাপ দেখতে পাওয়া যায়।
এছাড়াও সেই প্রতিবেদনে থাকা লেখার সাথেও এই প্রতিবেদনের লেখার অনেক মিল পাওয়া যায়। এমনকি সময়ের কন্ঠস্বরের এই প্রতিবেদনে ধর্মান্তরিত হওয়ার খবরের ঠিক নিচেই “সোনাগাজীতে বর্জ্রপাতে স্কুল ছাত্র নিহত শিরোনামে একটি খবর দেখতে পাওয়া যায়। ঠিক একইভাবে বর্তমানে ভাইরাল এই খবরের নিচেও স্কুল ছাত্র নিহতের ওই খবরটিও দেখতে পাওয়া যায়।
ভাইরাল খবরমূল খবর
এ থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে,বর্তমানে ভাইরাল এই খবরটি ২০১৮ সালে “সময়ের কন্ঠস্বর” এ প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদন থেকেই হুবহু নকল করাহয়েছে। অন্যদিকে, ভাইরাল প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, “বৃহস্পতিবার” এই ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু সেখানে উপরোক্ত ঘটনাটির কোনো তারিখ উল্লেখ না থাকায় বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, সময়ের কন্ঠস্বরের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজ থেকেও ২০ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে এই খবরটি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে লিঙ্কটি অকার্যকর দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া এই ওয়েবপোর্টালের বাইরে অন্য কোথাও এই খবরটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, দেখা যাচ্ছে কমপক্ষে প্রায় চার বছর পুরনো এক একটি ওয়েবপোর্টালের খবরকে কোনো তারিখ উল্লেখ না করে সাম্প্রতিক দাবি করে উপরোক্ত খবরটি ফেসবুকে ভাইরাল করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর। তাই ফ্যাক্টওয়াচ পুরনো এই খবরটিকে “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?