আলহামদুলিল্লাহ, জাতীয় দলের ক্রিকেটার [বিকাশ রঞ্জন দাশ] কালিমা পড়ে “মুসলিম” হয়েছে ।সূত্রঃ- জমুনা [যমুনা] টিভি—এমন একটি খবর ভাইরাল হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ক্রিকেটার বিকাশ রঞ্জন দাশ ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন ২০০৪ সালে। অর্থাৎ ১৭ বছরের পুরনো একটি খবর আজ নতুন করে ভাইরাল হয়েছে।
বা’হাতি ফাস্ট বোলার বিকাশ রঞ্জন দাস এর জন্ম ১৯৮২ সালে। ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অভিষেক টেস্ট ম্যাচে খেলেছিলেন তিনি। সেটিই ছিল তার প্রথম এবং একমাত্র টেস্ট ম্যাচ। দেশের হয়ে অন্য কোনো ওয়ানডে ম্যাচেও কখনো সুযোগ পাননি তিনি।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচে তিনি ঢাকা বিভাগ এর হয়ে খেলতেন। ইনজুরির কাছে পরাস্ত হয়ে ২০০৪ সালে পেশাদার ক্রিকেট থেকে তিনি দূরে সরে যান এবং ব্যাংকিং ক্যারিয়ার এ মনোনিবেশ করেন।
বাংলাক্রিকেট এর রেফারেন্স দিয়ে উইকিপিডিয়া জানাচ্ছে, ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি প্রণয়ঘটিত কারণে ধর্মান্তরিত হন ও ‘মাহমুদুর রহমান’নাম ধারণ করেন।
বাঙ্গি নিউজ নামক অনলাইন পোর্টাল জানাচ্ছে, ২০০৪ সালে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তার নতুন নাম হয় মাহমুদুল হাসান ।
আওয়ার ইসলাম ২৪ নামক অনলাইন পোর্টাল জানাচ্ছে, “মাহমুদুর রহমানের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পিছনে মুসলিম রমনীকে বিয়ে করার কারণটিই অধিক প্রসিদ্ধ।
ধর্মীয় বিশ্বাস বদলে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট দলের সবচেয়ে কম বয়সী ক্রিকেটারটি বেছে নিয়েছেন ইসলাম ধর্ম। এ জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে যথেষ্ট। একটা পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া এই পেসারের সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা।—তাঁর জীবনসঙ্গিনীও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।“
কয়েকটা ফেসবুক পোস্টে রেফারেন্স হিসেবে জমুনা টিভি (অর্থাৎ যমুনা টিভি)’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যমুনা টিউভিত ইউটিউব চ্যানেলে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পাওয়া গেল। ২০২১ সালের ২৭শে এপ্রিল রাজিন সালেহ নামাজ পড়তে শিখিয়েছে”; কীভাবে মুসলমান হলেন বিকাশ? শিরোনামের এই প্রতিবেদনে বিকাশ রঞ্জন দাস এর একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়। এখানে মাহমুদুল হাসান ওরফে বিকাশ রঞ্জন দাস বলেন, আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার পর আমি যে বিষয়টা উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, এর মতো শান্তির ধর্ম আরো কোনোটিই নয়। শৈশব থেকেই ইসলাম ধর্ম ভালো লাগতো। মুসলমানদের ধর্ম পালনরীতি আকর্ষিত করত আমাকে। পরে ইসলাম নিয়ে আমি পড়াশোনা করে জ্ঞান অর্জন করি। ক্রিকেটার রাজিন সালেহ আমার খুব কাছের বন্ধু। খেলার ফাঁকে ও নানা সময় রাজিন সালেহের নিয়মিত সালাত আদায় আমার ওপর প্রভাব ফেলে। এরপর আকরাম ভাই আমাকে দরুদে হাজারি পড়তে দেন। এরপর আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি।
প্রতিবেদনে তিনি কত সালে ইসলাম গ্রহণ করেছেন সেই তথ্য জানানো না হলেও, তাকে অভিষেক টেস্ট (২০০০ সাল) দলের সদস্য হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া তিনি যে অনেক দিন ধরেই মুসলিম হিসেবে জীবনযাপন করছেন, সেই কথা জানানো হয়।
একই সময়ে যমুনা গ্রুপ এর অপর সংবাদমাধ্যম ,দৈনিক যুগান্তর এও একই খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত
বিকাশ রঞ্জন দাস ধর্ম এবং নাম পরিবর্তন করে বর্তমানে মাহমুদুর রহমান (রানা) হিসেবে জীবনযাপন করছেন- এটা সত্য। তবে এটা ২০০৪ সাল এর ঘটনা, অর্থাৎ ১৭ বছর পূর্বের ঘটনা। এটির সাম্প্রতিক প্রচারণা বিভ্রান্তিকর এবং প্রেক্ষিতহীন। সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ এই খবরকে ‘বিভ্রান্তিকর’ সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?