গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নিয়ে যায় ডিবি। পরের দিন চট্টগ্রামের আদলতে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে আদালত চত্বরে সংঘর্ষের ঘটে এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের সনাক্ত করে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ফেসবুকে কিছু কিছু আইডি থেকে বলা হচ্ছে, গ্রেফতারকৃরদের ৪ জন শিবিরের এবং একজন সমন্বয়ক। এদিকে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, গ্রেফতারকৃত ছয়জন আওয়ামীলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্য। পুলিশের প্রতিবেদন, মূলধারার সংবাদমাধ্যম, প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ এবং কিছু ফেসবুক পোস্ট মিলিয়ে গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ছে। সমস্ত বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ফ্যাক্টওয়াচ চট্টগ্রামে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের পরিচিতি নিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলিকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৪ জন শিবির এবং ১ জন সমন্বয়ক – এই তথ্যসম্বলিত কিছু পোস্ট এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
আজ ২৮ নভেম্বর প্রথম আলো লিড নিউজ করেছে এই শিরোনামে- সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গ্রেফতার ৮। প্রতিবেদনের এই আট জনের নাম প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম আলোর ২৭ নভেম্বরের এক প্রতিবেদনে পুলিশের বরাতে বলা হয়েছে, পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বেশির ভাগই নগরের কোতোয়ালি এলাকার বান্ডিল সেবক কলোনির বাসিন্দা। এর মধ্যে সাতজন আইনজীবী হত্যায় জড়িত। তাঁরা হলেন রুমিত দাশ, সুমিত দাশ, গগন দাশ, নয়ন দাশ, বিশাল দাশ, আমান দাশ ও মনু মেথর।
প্রধান উপদেষ্টার বরাতে প্রথম আলো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ২৭ নভেম্বর এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে যে, হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন অন্তত ছয়জনকে আটক করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে এই ছয়জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার সংঘর্ষ চলাকালে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২১ জনকে আটক করেছে সিএমপি। বন্দরনগরে ককটেলসহ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পোস্ট উল্লেখ করে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন অন্তত ছয়জনকে আটক করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে এই ছয়জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার সংঘর্ষ চলাকালে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২১ জনকে আটক করেছে সিএমপি। বন্দরনগরীতে দেশীয় ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ (ককটেল) সহ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ফলে, চট্টগ্রামে আদালত চত্বর থেকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গ্রেফতারকৃতদের চারজন শিবিরের এবং একজন সমন্বয়ক – ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এই পোস্টগুলিকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে ফ্যাক্টওয়াচ।
সংশোধনীঃ পুর্বে এই রিপোর্টে সাইফুল ইসলাম আলিফকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। আসলে তিনি চট্টগ্রাম বারের রেগুলার আইনজীবী ছিলেন বলে পরবর্তীতে এই রিপোর্টে সংশোধন করা হয়েছে।
No Factcheck schema data available.
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh