১৫ জুলাই, ২০২৪ তারিখে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর এক পর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে তানিয়া আক্তার মিম নামের নামের এক শিক্ষার্থীর মারা যাওয়ার কথা জানানো হয়। দাবি অনুযায়ী তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তবে অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, উক্ত নামে কোনো শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। দাবিটি এসেছে ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ডের মতো করে তৈরি একটি ভুয়া ফটোকার্ডের মাধ্যমে।
ভাইরাল ছবিটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ডের মাধ্যমে এটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে। যদিও ডিবিসি নিউজ এ জাতীয় কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। বরং ডিবিসি নিউজের মতো করে ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত যে, ভুয়া ফটোকার্ডে শিরোনামে লেখা হয়েছে “ছাত্রলীগ হামলায় মাথায় আগাতে! সন্ধ্যা আহত শিক্ষার্থীর মৃত্যু” ব্যাকরণগতভাবে শিরোনামটিতে ব্যবহৃত বাক্যটি সঠিক নয়। সেখানে ভুল বানানও দেখা গেছে। অর্থাৎ ডিবিসি নিউজের মতো করে ভুয়া ফটোকার্ড বানানো হলেও সেখানে একাধিক ত্রুটি রয়েছে। যা দেখে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে ফটোকার্ডটি ভুয়া। অপরদিকে ফটোকার্ডটিতে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালে স্ট্রেচারে একজন নারী শায়িত অবস্থায় আছেন। তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে আরও কিছু নারী। এই অংশটুকুর ওপরে অনুসন্ধান করে পাওয়া যাচ্ছে, ছবিটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার ছবি নয়। ০৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে গণমাধ্যম যুগান্তর থেকে “শাড়ি নিয়ে ঢাবিতে মারামারি, ছাত্রলীগের ৩ নেত্রী আহত” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটির ফিচার ইমেজে যেই ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল সেই ছবি বর্তমানে ভুয়া ফটোকার্ডে ব্যবহার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপরে যেই আক্রমণ হয়েছে তার ফলে কয়েক সহস্র শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তাদের মধ্যে কিছু শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তবে ইতিমধ্যে কারো মৃত্যু হয়েছে এমন সংবাদ এখনো পর্যন্ত গণমাধ্যমে আসেনি। কোটা সংস্কারের দাবির পক্ষে যারা আছেন তারাও এখন পর্যন্ত এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করেন নি।
যেহেতু তানিয়া আক্তার মিম এর মৃত্যুর দাবিতে পুরানো ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, তাই এই দাবিকে ফ্যাক্টওয়াচ বিভ্রান্তিকর হিসেবে চিহ্নিত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।