এখন থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে তদারকি করবে ডিসি- ইউএনও। থাকছে না কোন কমিটি—এমন একটি গুজব ভাইরাল হয়েছে। সূত্র হিসেবে মাধ্যমিক -উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে উল্লেখ করা হচ্ছে। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।
মাধ্যমিক -উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর নামক কোনো সরকারি সংস্থাকে খুজে পাওয়া যায়নি। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর একটি দপ্তর রয়েছে। এই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এর ওয়েবসাইট থেকে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তদারকি সংক্রান্ত কোনো নোটিশ খুজে পাওয়া যায়নি।
তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এর বরাত দিয়ে একটি নোটিশ বা বিজ্ঞপ্তি গত ২৮শে জুলাই থেকে অনলাইনে দেখা যাচ্ছে।
বরিশাল ক্রাইম নিউজ নামক এই অনলাইন পোর্টাল এর এই খবর থেকে জানা যাচ্ছে,
বৃহস্পতিবার (২৯শে জুলাই) বিকেলে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন , গত ২৮ জুলাই বিভাগ থেকে ডিসি ও ইউএনওদের এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সমন্বয় শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব নাসরিন সুলতানা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসক সম্মেলনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তদারকি ও পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি ও পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
জানতে চাইলে নাসরিন সুলতানা বলেন, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি ও পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করতে ডিসি ও ইউএনওদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এই চিঠিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি বিলুপ্তি সংক্রান্ত কোনো তথ্য ছিলনা।
পরবর্তীতে পরিচালনা কমিটি বিলুপ্তির গুজবটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে আরো কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
দৈনিক নয়া দিগন্তে ১৪ই আগস্ট প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, এ দিকে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর মাধ্যমে পরিদর্শন কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের ‘গুজব’ তৈরি হয়েছে। অনেক শিক্ষক মনে করছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং/গভর্নিং কমিটি থাকছে না। জেলা প্রশাসক ও ইউএনওরা নিয়মিত কমিটির কাজ করবেন। যেসব কমিটি রয়েছে তা বিলুপ্তি করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এটা আসলে সঠিক নয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ ইমামুল হক বলেন, স্কুল-কলেজে গভর্নিং/ম্যানেজিং কমিটি বাতিল হবে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বর্তমানে দেশের সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে সব স্থানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার আলোকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার সাথে সুষ্ঠুভাবে পাঠদান করতে পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা রিউমার স্ক্যানার ও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পরিচালনা কমিটি না থাকার দাবিটিকে তারা বিভ্রান্তিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
যেহেতু ভাইরাল পোস্টের একটি তথ্য সত্য ( শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তদারকি করবে ডিসি-ইউএনও) এবং একটি অংশ মিথ্যা ( পরিচালনা কমিটি বিলুপ্ত হবেনা) ,তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই পোস্টগুলোকে ‘আংশিক মিথ্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?