কোটা আন্দোলনে মৃতের সংখ্যা নিয়ে প্রথম আলোর বরাতে ভূয়া দাবি

67
কোটা আন্দোলনে মৃতের সংখ্যা নিয়ে প্রথম আলোর বরাতে ভূয়া দাবি
কোটা আন্দোলনে মৃতের সংখ্যা নিয়ে প্রথম আলোর বরাতে ভূয়া দাবি

Published on: [post_published]

যা দাবি করা হচ্ছে: দৈনিক প্রথম আলো’র বরাতে দাবি করা হচ্ছে যে, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদদের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়ে গেছে। 

অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছে: গণমাধ্যমের তথ্যমতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক নিশ্চিত মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে গণমাধ্যমগুলো বলছে তারা সব হাসপাতালে যোগাযোগ করতে পারেনি। নিহতের সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। তবে কোন গণমাধ্যমই নিহতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশ করেনি। দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের সর্বশেষ ভুক্তি অনুযায়ী, নিশ্চিত মৃতের সংখ্যা ২০৪ জন।

ছড়িয়ে পড়া কয়েকটা পোস্ট দেখতে পাবেন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে


ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

২৬শে জুলাই, ২০২৪ রাত ১২টা ৪৪ মিনিটে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে “চিকিৎসাধীন আরও তিনজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ২০৪” শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম আলোর উক্ত খবরে বলা হচ্ছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ, পরবর্তী সময়ে সংঘাতে ঢাকাসহ সারা দেশে ২০৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। মৃত্যুর এই হিসাব কিছু হাসপাতাল, মরদেহ নিয়ে আসা ব্যক্তি ও স্বজনদের সূত্রে পাওয়া। সব হাসপাতালের চিত্র পাওয়া যায়নি।

প্রথম আলোর উক্ত সংবাদে ১৬ই জুলাই থেকে ২৪ জুলাই প্রতিদিনে নিহতের সংখ্যার হিসাবও দেওয়া হয়েছে। প্রথম আলোর উক্ত সংবাদ মতে১৬ই জুলাই থেকে ২৪ জুলাই নিহতের সংখ্যা যথাক্রমে ১৬ই জুলাই  ৬ জন, ১৮ই জুলাই ৪১ জন, ১৯শে জুলাই ৮৪ জন, ২০ শে জুলাই ৩৮ জন, ২১শে জুলাই ২১ জন, ২২ শে জুলাই ৫ জন, ২৩ শে জুলাই ৩ জন এবং ২৪ শে জুলাই ৩ জন ও ২৫শে জুলাই ৩ জন।

২৫শে জুলাই, ২০২৪ তারিখে সর্বশেষ আপডেট করা বাংলাদেশ জার্নালের খবরে নিহতের সংখ্যা ২০১ জন জানানো হচ্ছে। তাদের হিসাব মতে ১৬ জুলাই (মঙ্গলবার) ৬ জন, ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ৪১, ১৯শে জুলাই ৮৪, ২০শে জুলাই ৩৮, ২১ শে জুলাই ২১, ২২ শে জুলাই ৫, ২৩ শে জুলাই ৩ ও ২৪ শে জুলাই ৩ জনের মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, গত সোম, মঙ্গলবার ও বুধবার মৃত্যু চিকিৎসাধীন অবস্থায় হয়েছে।

দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসও তাদের খবরে জানাচ্ছে নিহতের সংখ্যা ২০১ জন। বহির্বিশ্বের সংবাদমাধ্যমের মধ্যে, ভারতের হিন্দুস্থান টাইমস এর হিসাবে এই সংখ্যাটা ১৯১, এ এফ পি’র হিসেবে ১৭৪, তুরস্কভিত্তিক আনাতোলিয়া এজেন্সির হিসেবে ২০১ এবং জার্মানিভিত্তিক ডয়েচে ভেলের হিসাবে ২০৩

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে দেশী বা বিদেশী কোনো গণমাধ্যমেই ৯০০ জন নিহতের দাবি করা হয়নি।

সিদ্ধান্ত:

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে সর্বশেষ আপডেট করা প্রথম আলোর খবরে হচ্ছে নিহতের সংখ্যা ২০৪ জন। অন্যান্য গণমাধ্যম ও কাছাকাছি সংখ্যাই জানিয়েছে । তবে কোন গণমাধ্যমেই নিহতের সংখ্যা ৯০০ বা তার অধিক দাবি করেনি।  গণমাধ্যম গুলো এটাও বলেছে যে তারা সব হাসপাতালে খবর নিতে পারেনি। তাই নিহতের সংখ্যা আরো বেশিও হতে পারে, কিন্তু প্রথম আলো এখনই এমন কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।  তাই ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

 

No Factcheck schema data available.