সাঈদীর অসুস্থতার দাবিতে পুরনো ছবি ভাইরাল

28
সাঈদীর অসুস্থতার দাবিতে পুরনো ছবি ভাইরাল সাঈদীর অসুস্থতার দাবিতে পুরনো ছবি ভাইরাল

Published on: [post_published]

সম্প্রতি দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী জেলখানায় অসুস্থ দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ছবিটি কমপক্ষে ১০ বছর আগের। জানা যায়, ২০১২ সালে অসুস্থতার কারণে তাকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেসময় পাওয়া একাধিক ফেসবুক একাউন্ট এবং পেজ থেকে একই দাবিতে এই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে যেহেতু মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি, তাই বলা যাচ্ছে না ছবিটি আরো আগের কিনা। তবে এইটুকু নিশ্চিতভাবেই বলা যাচ্ছে যে, ছবিটি সাম্প্রতিক নয়, এছাড়া মূলধারার গণমাধ্যমে সম্প্রতি তার অসুস্থতার কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

ভাইরাল ছবিটির সাহায্যে অনুসন্ধান করা হলে, ২০২১ এবং ২০২২ সালে বিভিন্ন ফেসবুক পোস্টে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়া ২০ জুন, ২০১২ এ প্রকাশিত একটি ব্লগপোস্টেও এই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও সেই পোস্টটিতে তার মৃত্যুর খবর-সংক্রান্ত একটি গুজব ছিলো।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে ফেসবুকের এডভান্স সার্চ ব্যবহার করে ২০১২ সালের জুন মাসে প্রকাশিত বেশ কিছু ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। এমন কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

এর মধ্যে সর্বশেষ ১৫ জুন, ২০১২ এ উক্ত ছবিসহ এই পোস্টটি পাওয়া যায়।

সেখানে দাবি করা হয়, “ছেলে মাওলানা রাফীক বিন সাঈদীর জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে যাওয়ার পথেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারাগারে নেয়ার পর তাকে বারডেম হাসপাতালে নেয়া হয়েছে“। পরবর্তীতে এই কি-ওয়ার্ডগুলোর সাহায্যে অনুসন্ধান করা হলে, দৈনিক সংগ্রাম নামে একটি ওয়েবপোর্টালে এই প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে ভাইরাল এই ছবিটি না থাকলেও এটি বুঝা যায় যে এই প্রতিবেদনটি হুবুহু ক্যাপশনে তুলে ধরা হয়েছে।

 

পরবর্তীতে উক্ত খবরের সত্যতা জানতে পুনরায় অনুসন্ধান করা হলে, বিডিনিউজ ২৪ এর একটি প্রতিবেদন থেকে এর সত্যতা পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়, “এদিকে জানাজার পর কারাগারে ফেরত নেওয়া হলে বৃহস্পতিবার রাতে বুকে ব্যথা অনুভব করার কথা জানান সাঈদী। তখন তাকে বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ মাহাবুবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।“

তবে সেখানেও ভাইরাল এই ছবিটি ছিলো না। তবে একাধিক প্রতিবেদন থেকে এটি নিশ্চিত যে সেসময় তিনি অসুস্থ ছিলেন। এছাড়া ২১ জুন, ২০১২ এ দৈনিক নয়া দিগন্তের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে সম্প্রতি ভাইরাল এই ছবির কাছাকাছি আরেকটি ছবি পাওয়া যায়।

এছাড়া ২০২০ এবং ২০২১ সালসহ বিভিন্নসময় তার সম্প্রতি ভাইরাল এই ছবির মাধ্যমে একই দাবি ভাইরাল হয়েছিলো। এর প্রেক্ষিতে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীর ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজ  থেকে ২০২০ এবং ২০২১ সালে দাবিটি “অসত্য” এবং ছবিটি ২০১২ সালের বলে দাবি করেন। তবে সেসব পোস্টেও ভাইরাল এই ছবিটি দেয়া ছিল না।

যেহেতু ভাইরাল এই ছবিটি নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে খুঁজে পাওয়া যায়নি তাই ছবিটি সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কোনোভাবে কোনো তথ্য দেয়া যাচ্ছে না। তবে এইটুকু নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে যে, ছবিটি কমপক্ষে ২০১২ সালের।

অন্যদিকে, মূলধারার গণমাধ্যমেও সম্প্রতি তার কোনো শারীরিক অসুস্থতার কোনো খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত পড়ুন এখানে

অতএব, কমপক্ষে দশ বছর পুরনো এই ছবিসহ দাবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ বিভ্রান্তিকর চিহ্নিত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.