সম্প্রতি প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দুটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে এগুলো পুলিশের হাতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রেফতার হওয়ার ছবি। কিন্তু, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রেফতার সংক্রান্ত তথ্য মূলধারার সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, ভাইরাল ছবিগুলোও বাস্তব নয়, এগুলো মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে তৈরি করা। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
ভাইরাল ছবিগুলোর সাহায্যে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হলে News 18 এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গত ২২ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোর অনুরূপ ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায় এই ছবিগুলো আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি।
এই সূত্র অনুসারে প্রাসঙ্গিক কিছু কি- ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করে সংবাদ আউটলেট বেলিংক্যাটের প্রতিষ্ঠাতা এলিয়ট হিগিন্সের টুইটার অ্যাকাউন্টে ট্রাম্পের আরও কিছু ছবির সাথে ভাইরাল হওয়া দ্বিতীয় ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে এলিয়ট হিগিন্স নিশ্চিত করেন যে, ছবিগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এর টেক্সট-টু-ইমেজ জেনারেটর মিডজার্নি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। এএফপিকেও তিনি এ ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়াও, এলিয়ট হিগিন্স মিডজার্নি ব্যবহার করে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানের ছবি তৈরি করেছেন এবং তার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে আপলোড করেছেন। যেমনঃ ভ্লাদিমির পুতিন, ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং জো বাইডেন।
Playing around with #midjourneyv5 I decided to see if it could create realistic news images, so here’s the entirely fictional Ukrainian peace talks between France, the US, Russia and Ukraine: pic.twitter.com/saCKtgBL91
যদিও, ভাইরাল হওয়া প্রথম ছবিটি এলিয়ট হিগিন্সের টুইটার অ্যাকাউন্টে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু ছবিটি খেয়াল করে দেখলে বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পাওয়া যাবে। যেমনঃ ট্রাম্পের দুই হাত, তাকে ধরে থাকা পুলিশদের হাত ইত্যাদি।
অন্যদিকে, ভাইরাল হওয়া পোষ্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মার্কিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সেই দেশের গণতন্ত্রের লঙ্ঘন ঘটেছে। তই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সত্যিই গ্রেফতার করা হয়েছে কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক কিছু কি- ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে এই দাবির সমর্থনে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।ডোনাল্ড ট্রাম্প যেহেতু একজন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, সুতরাং তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে তার উল্লেখ সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমেই পাওয়া যাবে।
যেহেতু ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রেফতারের ছবিগুলো আসল নয় এবং তার গ্রেফতার সংক্রান্ত কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যও খুঁজে পাওয়া যায়নি, সুতরাং এই অবাস্তব ঘটনার জন্য আমেরিকার গণতন্ত্রের লঙ্ঘন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পকে গ্রেফতারের ছবিগুলো নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশ করা কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
তাই সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।