নিয়ম মেনেই আয়করমুক্ত সুবিধা ফিরে পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক 

102
নিয়ম মেনেই আয়করমুক্ত সুবিধা ফিরে পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক 
নিয়ম মেনেই আয়করমুক্ত সুবিধা ফিরে পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক 

আগামী পাঁচ বছরের জন্য আয়করমুক্ত সুবিধা ফিরে পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক। ১৯৮৩ সালে ওয়েলফেয়ার প্রতিষ্ঠান হিসেবে শুরু থেকেই এই সুবিধা পেয়ে এসেছে ব্যাংকটি। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই সুবিধা বন্ধ করে দেয় তৎকালীন সরকার। তখন সরকারের কাছে পুনরায় কর মওকুফের আবেদন করলেও তাতে সাড়া পায় নি ব্যাংকটি। গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত করমুক্ত সুবিধা পেয়েছে দাতব্য প্রতিষ্ঠান আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনও। এই দুই প্রতিষ্ঠানের কর অব্যাহতির সুবিধা দিয়ে ১০ অক্টোবর এনবিআর চেয়ারম্যান মো আবদুর রহমান খানের সই করা এক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে এনবিআর। প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২৩ সালের আয়কর আইনের ৭৬ এর উপধারা (৫) এবং (৬) এর বিধানাবলী প্রতিপালন সাপেক্ষে অর্জিত সব আয়কে আয়কর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি আছে। এই প্রতিষ্ঠানটি নামে ব্যাংক হলেও এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে অন্যান্য ব্যাংকের মতো সিডিউল ব্যাংক নয়। এটি মূলত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে।  

এনবিআরের চেয়ারম্যান বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে যারা কাজ করে তারাও একই সুবিধা পায়। গ্রামীণ ব্যাংকেরটা যেহেতু বাদ হয়ে গিয়েছিল আমরা একই ফর্মুলায় সেটি ঠিক করে দিলাম। এটা ন্যায্যতা ও সমতা। একই শর্তে ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত দানকৃত আয় থেকে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনকে।”  

দুই প্রতিষ্ঠানকেই  আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। অর্থাৎ, আয় ব্যয়ের সমস্ত হিসেব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে। 

গ্রামীণ ব্যাংকের আয়কর মুক্তির খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানারকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সরকার প্রধান হিসেবে প্রফেসর ইউনূস কোনো প্রভাব খাটিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ সুবিধা নিয়েছেন – এমন বিভ্রান্তিকর অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। এসব পোস্টগুলি পাবেন এখানে, এখানে, এবং এখানে।  

প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৮৩ বাতিল করে সরকার যখন ২০১৩ সালে আইন করে, তখনও বহাল রাখা হয় এ সুবিধা। কিন্তু ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সুবিধাটি হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলারিটি অথরিটি (এমআরএ) থেকে নিবন্ধন নেওয়া সব ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানই আয়কর মুক্ত। 

অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বিবিসি  বাংলাকে বলেন, ‘’এটা আইনের মধ্যে না থাকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বিগত সরকারের যে টানাপোড়েন ছিল, তারা কখনো ২০২০ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংককে কর অব্যাহতি সুবিধা দিত না।’’ অর্থাৎ গ্রামীণ ব্যাংকের করমুক্তি সুবিধাই আইনসঙ্গত, করমুক্তি সুবিধা বন্ধ করেই আইন ভেঙেছিল বিগত সরকার। 

ক্ষুদ্র ঋণ ছাড়াও গৃহ ঋণ, শিক্ষা ঋণ, ভিক্ষুক ঋণ দিয়ে থাকে গ্রামীণ ব্যাংক।  

ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের লেখা সামাজিক ব্যবসা বইয়ে তিনি লিখেছেন, গ্রামীণ ব্যাংক যাদের ঋণ দেয়, তাদের প্রত্যেকের গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানা আছে। (পৃ-৮৩)

ফলে, এই প্রতিষ্ঠানটি সামষ্টিক আয়কর প্রদানের আদলে তৈরিই হয়নি। 

সঙ্গত কারণে গ্রামীণ ব্যাংকের করমুক্তি সুবিধা নিয়ে প্রচারিত এসব অভিযোগকে ফ্যাক্টওয়াচ বিভ্রান্তিকর সাব্যস্ত করছে।

No Factcheck schema data available.

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh