লাইভে এসে আসিফ নজরুল সুইজারল্যান্ডে ড. ইউনূসের গ্রেফতারসংক্রান্ত কিছু বলেননি

47
লাইভে এসে আসিফ নজরুল সুইজারল্যান্ডে ড. ইউনূসের গ্রেফতারসংক্রান্ত কিছু বলেননি
লাইভে এসে আসিফ নজরুল সুইজারল্যান্ডে ড. ইউনূসের গ্রেফতারসংক্রান্ত কিছু বলেননি

সম্প্রতি থ্রেডসে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যের একটি লাইভ ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে দাবি করা হচ্ছে তিনি লাইভে এসে ড. ইউনূস সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হননি এবং ড. আসিফ নজরুলও লাইভে এসে এমন কোনো তথ্য জানাননি। অন্যদিকে, আসিফ নজরুলের বক্তব্যের এই লাইভ ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। তিনি মূলত আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আত্মসমার্পনের পরে কারাগারে পাঠানোর কারণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য লাইভ ভিডিওটি করেছিলেন। সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় ভাইরাল পোষ্টগুলো মিথ্যা। 

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে ২১ জানুয়ারি ২০২৫ এ সুইজারল্যান্ড গিয়েছিলেন। কিন্তু ‘প্রধান উপদেষ্টাকে সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে’- এই দাবিটির সমর্থনে নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমন কোনো ঘটনা বাস্তবে ঘটে থাকলে তার উল্লেখ মূলধারার সংবাদগুলোতে পাওয়া যেত। তাছাড়া ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ড সফর শেষে ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ এ দেশে ফিরেছেন। 

অন্যদিকে, থ্রেডসে ছড়িয়ে পড়া আসিফ নজরুলের লাইভ ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। এর ফলে জানা যায়, আসিফ নজরুল এই লাইভ ভিডিওটি তার ফেসবুক পেজ থেকে ২ অক্টোবর ২০২৪ এ শেয়ার করেছিলেন। সেখানে আদালত কেন মাহমুদুর রহমানকে আত্মসমর্পণের পরেও কারাগারে পাঠিয়েছে তার ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন। আসিফ নজরুলের এই ভিডিওবার্তা অনুযায়ী, সাজা স্থগিত রেখে আপিল করার আবেদন না করার কারণে কারাগারে গিয়েছেন মাহমুদুর রহমান।  অর্থাৎ, লাইভ ভিডিওতে আসিফ নজরুল প্রধান উপদেষ্টা সম্পর্কে কিছু বলেননি। 

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল ঢাকার কারওয়ান বাজারে আমার দেশ কার্যালয় থেকে গ্রেফতার হন মাহমুদুর রহমান। পরে কারাবান্দি অবস্থায় ২০১৬ সালের এপ্রিলে তাকে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপরে ২০১৬ সালের নভেম্বরে মাহমুদুর রহমান জামিনে মুক্তি পান এবং লন্ডনে চলে যান। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এ তিনি দেশে ফেরেন এবং ২৯ সেপ্টেম্বর আদলতে আত্মসমর্পন করতে যান এবং আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। ৩ অক্টোবর তিনি জামিনে মুক্ত হন।

অর্থাৎ, আসিফ নজরুলের বক্তব্যের এই লাইভ ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, সম্পুর্ন ভিন্ন প্রেক্ষিতে লাইভ ভিডিওটি তিনি করেছিলেন। সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ আলোচিত পোষ্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। 

থ্রেডসে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোষ্ট দেখুন এখানে, এখানে, এবং এখানে। 

Claim:
থ্রেডসে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যের একটি লাইভ ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে তিনি লাইভে এসে ড. ইউনূস সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

Claimed By:
Threads users

Rating:
False

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh