গ্রামীণ আমেরিকার পক্ষ থেকে ইসরাইলকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার মিথ্যা দাবি

51
গ্রামীণ আমেরিকার পক্ষ থেকে ইসরাইলকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার মিথ্যা দাবি গ্রামীণ আমেরিকার পক্ষ থেকে ইসরাইলকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার মিথ্যা দাবি

Published on: [post_published]

যা দাবি করা হচ্ছে : ইসরাইলকে ১০০ কোটি টাকার সহায়তা দিলেন ড. ইউনূস এর প্রতিষ্ঠান ‘গ্রামীণ আমেরিকা’।

অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছে : এটি একটি পুরনো গুজব, যা ইউনুস সেন্টার আগেই অস্বীকার করেছিল। এছাড়া, গ্রামীণ আমেরিকা এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আয়-ব্যয়ের বিবরণে এমন বড় অংকের অস্বাভাবিক লেনদেনের কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি। তাদের কার্যক্রম মূলত আমেরিকান দরিদ্র নারীদের ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা দেয়া, যে কার্যক্রমের সাথে অন্য কোনো দেশকে আর্থিক সাহায্য করা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

গুজবের উৎস

ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে,এখানে,এখানে,এখানে,এখানে,এখানে,এখানে

মূলত ‘বাংলা ইনসাইডার’ নামক একটি সংবাদমাধ্যমে গত ১৩ই অক্টোবর ২০২৩ তারিখে “ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকার সহায়তা দিলেন ড. ইউনূস” শীর্ষক একটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় ফেসবুকেও এই গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল।  এই পত্রিকাকে উদ্ধৃত করে অনেক রাজনীতিবিদও একই দাবি করেছিলেন। বর্তমানে এই ‘বাংলা ইনসাইডার’ বন্ধ রয়েছে। তবে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত উক্ত খবরের ছাপানো ভার্সনের একটি ছবি দিয়ে বর্তমানে এই গুজব আবার ভাইরাল হয়েছে।

অনুসন্ধান

ছড়িয়ে পড়া উক্ত ছবি থেকে প্রকাশিত খবরের অংশবিশেষ নিম্নরূপ- গাজা যখন জ্বলছে, মুসলমান নাগরিকরা যেখানে এক দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে,নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে নারী-শিশু সহ সব মানুষকে,মানবতার চরম লঙ্ঘন করছে ইসরায়েল, ঠিক সেই সময় ইসরায়েলের পাশে দাড়ালেন শান্তিতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড মুহম্মদ ইউনুস। ড মুহম্মদ ইউনুস ইসরায়েলের মানবিক বিপর্যয়ের কথা বলে সেই দেশকে একশো কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে।

গ্রামীণ আমেরিকা ইসরায়েলকে এই মানবিক সহায়তা দিয়েছে। গ্রামীণ আমেরিকার কো-চেয়ার হলেন ড  মুহম্মদ ইউনুস। তিনি গ্রামীণ আমেরিকার প্রতিষ্ঠাতাও বটে। গ্রামীণ আমেরিকার দুইজন কো-চেয়ারের………।

গ্রামীণ আমেরিকার ওয়েবসাইট এ তাদের কার্যক্রম থেকে দেখা যাচ্ছে, তারা প্রান্তিক নারীদের ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে থাকেন, যে ঋণ শুরু হয় ২৫০০ ডলার থেকে। অন্য কোনো কার্যক্রমের কথা এখানে উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া, ওয়েবসাইটের ‘ফিনান্সিয়াল ইনফর্মেশন’ অংশ থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের পুরো বছরে এই গ্রামীণ আমেরিকা’র খরচ ছিল ৩২,৯৪৪,০০০ ডলার। এর মধ্যে ৩০,৮২৫,০০০ ডলার খরচ হয়েছে গ্রাহকদের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়ার জন্য, এবং ২,১১৯,০০০ ডলার খরচ হয়েছে এই কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য। মানবিক বিপর্যয়ের কারণে ইসরায়েল বা কোনো দেশকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার কোনো খাত এখানে দেখা যাচ্ছে না।

গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে ২০০৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত গত ১৫ বছরে গ্রামীণ আমেরিকা মোট ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করেছে। নারীদের ঋণ প্রদান ছাড়া গ্রামীণ আমেরিকার অন্য কোনো কার্যক্রমের কথা এখানে পাওয়া যায়নি।

১৮ই অক্টোবর ২০২৩ তারিখে Yunus Center নামক ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে ‘ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকা সহায়তা’ দেওয়ার খবরটি গুজব হিসেবে চিহিত করা হয়। এহাড়া সে সময়ে বুম বিডিরিউমার স্ক্যানার থেকে এই গুজবের বিস্তারিত ফ্যাক্টচেকিং প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

সার্বিক বিবেচনায়, নতুনভাবে ছড়িয়ে পড়া এই গুজবকে ফ্যাক্টওয়াচ ‘মিথ্যা’ হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.