শেখ হাসিনা ৫ আগাস্ট ২০২৪- এ ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে ভারতে চলে যান। ভারতে যাওয়ার পরে তাদের সেখানে অবস্থানরত কোনো ছবি নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। কিন্তু ফেসবুকে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সাথে শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে যাওয়ার পরে ছবিটি তোলা হয়েছিল। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে ছবিটি মূলত রাণি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময়কার ছবি। ভারতের রাষ্ট্রপতির অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট এবং ফেসবুক পেজ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ এই ছবিটি আপলোড করা হয়েছিল। সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় ভাইরাল পোষ্টগুলো মিথ্যা।
৫ আগস্ট ২০২৪-এ শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতের আগরতলা হয়ে দিল্লী যান। বর্তমানে তিনি দিল্লীতেই অবস্থান করছেন। এর পর থেকে শেখ হাসিনার সেখানে অবস্থানরত কোনো ছবি মূলধারার সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য অন্য কোনো মাধ্যম থেকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া দ্রৌপদী মুর্মু, শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার ছবিটিকে দিল্লীতে ধারণ করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
তাই এই দাবিটিকে যাচাই করার জন্য প্রথমে ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখা হয়। ছবিতে তিনজনই কালো রঙের পোশাক পড়ে ছিলেন। শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার পোশাকের সাথে রাণি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ছবি যুক্ত কালো ব্যাজ দেখতে পাওয়া যাবে।
এরপরে সংবাদ সংস্থা এএনআই এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ভাইরাল ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, দ্রৌপদী মুর্মু শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানা লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। রাণির রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুরুর ঠিক আগে তারা সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং ছবি তুলেছিলেন। দ্রৌপদী মুর্মুর অফিশিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট এবং ফেসবুক পেজ থেকে তাদের তিনজনের এই ছবিটি পোস্ট করা হয়েছিল। এই পোষ্টকে কেন্দ্র করেই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল।
President Droupadi Murmu met with Prime Minister of Bangladesh Sheikh Hasina and her sister, Sheikh Rehana just before commencement of the State Funeral at London. pic.twitter.com/PZWiAcqtsF
দেখা যাচ্ছে যে, ভাইরাল ছবিটি শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়া যাওয়ার অনেক আগে লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে ধারণ করা হয়েছিল। সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোষ্টগুলোকে মিথ্যা বলে চিহ্নিত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।