বাংলাদেশীদের জন্য ডিভি লটারি ২০২৪-এ আবেদনের ভুয়া পোস্ট 

150
বাংলাদেশীদের জন্য ডিভি লটারি ২০২৪-এ আবেদনের ভুয়া পোস্ট 
বাংলাদেশীদের জন্য ডিভি লটারি ২০২৪-এ আবেদনের ভুয়া পোস্ট 

Published on: [post_published]

সম্প্রতি ফেসবুকে বাংলাদেশীদের জন্য ২০২৪ সালের আমেরিকান ডিভি লটারিতে আবেদন সংক্রান্ত একটি পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে ২০২৪ সালের ডিভি লটারিতে বাংলাদেশীদের আবেদনের সুযোগ রয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে ডিভি লটারির বিষয়ে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের নির্দেশিকা থেকে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশ সহ ২০ টি দেশ ২০২৪ সালের ডিভি লটারি প্রোগ্রামের আওতার বাইরে। ডিভি লটারির আওতায় ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের উচ্চহারের কারণে ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশীদের জন্য ডিভি লটারির আবেদন বন্ধ রয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ডিভি লটারিতে আবেদনের নামে প্রতারণামূলক পোস্টের ব্যাপারে মার্কিন দূতাবাস থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এসব প্রতারণামূলক পোস্টকে মিথ্যা আখ্যা দিচ্ছে।

গুজবের উৎস 

ফেসবুকে ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে পোস্টটি পাওয়া যাচ্ছে। অদ্যাবধি বিভিন্ন পেইজ থেকে পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান 

ডিভি (Diversity Visa) লটারি একটি কর্মসূচী যার আওতায় লটারির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সে দেশে বসবাসের সুযোগ দিয়ে থাকে। যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের হার তুলনামূলকভাবে কম কর্মসূচি মূলত সেসব দেশের  জন্য প্রযোজ্য। 

পোস্টগুলোর কোনোটিতে বলা হচ্ছে বিনামূল্যে আবেদন করা যাবে, আবার কোনোটিতে বলা হচ্ছে আবেদন ফি আড়াইশো টাকা। পোস্টের সাথে সংযুক্ত লিংক ওপেন করে দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগই মূলত ক্লিকবেইট। 

এর মধ্যে একটি ওয়েবসাইট লিংকে ঢুকে দেখা যাচ্ছে ‘Opportunity for 40,000 Bangladeshis to obtain citizenship in the United States’ ক্যাপশনে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ ডট কমের একটি প্রতিবেদনের অংশবিশেষের ছবি। প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড ধরে জাগোনিউজ ডট কম থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর প্রকাশিত মূল প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্ট প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি আইনি পদক্ষেপ বাতিল ঘোষণা করায় সাড়ে আট লক্ষাধিক তরুণতরুণীর আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ সৃষ্টি হয়, যাদের মধ্যে ৪০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি আছেন। উল্লেখ্য, রায়টি দেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসীদের জন্য যারা গ্রিন কার্ড বা স্থায়ী অভিবাসনের জন্য লড়াই করছিলেন। এর সাথে ডিভি লটারির কোনো সম্পর্ক নেই।

বাংলাদেশীরা মার্কিন ডিভি লটারি ২০২৪ সালের জন্য মনোনীত কিনা জানতে ইন্টারনেটে সন্ধান করে US Department of State-এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে ২০২৪ সালের ডিভি প্রোগ্রামের জন্য বাংলাদেশসহ ২০টি দেশের নাগরিক প্রোগ্রামে আবেদনের অযোগ্য।

বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে, ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে প্রোগ্রামের আওতায় ৫০ হাজারের বেশি বাংলাদেশী যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হওয়ায় ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশীদের জন্য ডিভি প্রোগ্রামটি বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা ডিভি লটারির নামে প্রতারণা করে চলেছে ব্যাপারেও মার্কিন দূতাবাস সতর্ক করেছে।  

বণিকবার্তার ২০২২ সালের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে অন্তত ২০ হাজার অভিবাসন প্রার্থীর কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে একটি ভিসা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাস।

তাই প্রমাণসাপেক্ষে ফ্যাক্টওয়াচ পোস্টকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে একই প্যাটার্নে ডিভি লটারি ২০২২তে আবেদনের ভুয়া পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিলো। সংক্রান্ত ফ্যাক্টওয়াচের রিপোর্ট দেখুন এখানে

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.