২০১৩ সালের ০৫ মে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় তোলা একটি ছবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজন সমন্বয়ক - নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, এবং হাসনাত আব্দুল্লাহকে দেখা গেছে বলে সামাজিক মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে। তবে, ফ্যাক্টওয়াচ টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, আলোচিত ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ০৫ মে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় ইসমাইল ফেরদৌস (Ismail Ferdous) নামক একজন ফটোগ্রাফার একটি ছবি তোলেন, যার সাথে আমাদের আলোচিত ছবিটির বেশ মিল রয়েছে। মূলত ইসমাইল ফেরদৌসের তোলা ছবিটিকেই এডিট করে সেখানে তিনজন সমন্বয়কের চেহারা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে, অনেকেই এটিকে আসল ছবি ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিটিকে “বিকৃত” বলে সাব্যস্ত করছে।
ঢাকায় ২০১৩ সালের ০৫ মে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় তোলা একটি ছবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজন সমন্বয়ককে আসলেই দেখা গেছে কিনা সেটি যাচাই করে দেখতে ফ্যাক্টওয়াচ টিম ছবিটির উৎস অনুসন্ধান করেছে। রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখা গেছে, আমাদের আলোচিত ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি ২০১৩ সালের ০৫ মে “Deseret News” নামক একটি ওয়েবসাইটে “Violence in Bangladesh as Islamic activists demand anti-blasphemy law” শিরোনামের প্রতিবেদনে ফিচার ছবি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ছবিটির নিচে ক্যাপশনে ফটোগ্রাফার হিসেবে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এর ইসমাইল ফেরদৌসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
পরবর্তীতে তার নাম লিখে গুগলে অনুসন্ধান করা হলে ইন্টারনেট ফটো আর্কাইভ “alamy” তে ইসমাইল ফেরদৌসের তোলা ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির বিস্তারিত বর্ণনা অংশ পড়ে জানা গেছে, এটি ২০১৩ সালের ০৪ মে তোলা হয়েছিল। মূল ছবিতে ঐ তিনজন সমন্বয়কের স্থলে যাদের দেখা যাচ্ছে তাদের চেহারার সাথে আমাদের আলেচিত ছবিতে দৃশ্যমান ব্যক্তিদের চেহারার কোন মিল নেই। মূলত ইসমাইল ফেরদৌসের তোলা ছবিটিকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় এডিট করে তিনজন সমন্বয়কের চেহারা বসিয়ে দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা হচ্ছে। ফলে, অনেক ব্যবহারকারী এটিকে আসল ছবি ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন এবং ছবিটি শেয়ার করছেন।
অতএব, উপরের আলোচনা থেকে এই বিষয়টি স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, ২০১৩ সালের ০৪ মে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় তোলা একটি ছবিকে এডিট করে তিনজন সমন্বয়কের চেহারা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিটিকে বিকৃত বলে সাব্যস্ত করছে।
No Factcheck schema data available.
ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh