এসএসসি পরীক্ষায় গণিতে ৯ পেলে পাশ ৫৫ পেলে এ প্লাস – একথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী?

65
এসএসসি পরীক্ষায় গণিতে ৯ পেলে পাশ ৫৫ পেলে এ প্লাস – একথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী?
এসএসসি পরীক্ষায় গণিতে ৯ পেলে পাশ ৫৫ পেলে এ প্লাস – একথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী?

Published on: [post_published]

যা দাবি করা হচ্ছেঃ  “২০২৪ এসসসি পরীক্ষায় গণিতে  মাত্র ৯ পেলেই পাশ, ৫৫ পেলে এ প্লাস”  এমন কথা বলেছেন বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছেঃ দাবিটি মিথ্যা। মহিবুল হাসান চৌধুরী এমন কোনো কথা বলেননি। মূল ভিডিওতে তিনি মূলত বিভিন্ন পরীক্ষার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রচারের সমালোচনা এবং অভিভাবকদের অনৈতিক তদবির সম্পর্কে বলছিলেন। অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রীর এসএসসি পরীক্ষায় গণিত বিষয়ের পাশ নাম্বার ৩৩ থেকে ৯ এ পরিবর্তন করা সংক্রান্ত প্রমাণ মূলধারার সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে পাওয়া যায়নি।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোষ্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানঃ 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টেগুলোতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর ছবি ব্যবহার করে সেখানে ‘২০২৪ এসসসি পরীক্ষায় গণিতে  মাত্র ৯ পেলেই পাশ, ৫৫ পেলে এ প্লাস শীর্ষক টেক্সট বসিয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ এর মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে যে, ২০২৪ এসসসি পরীক্ষা সম্পর্কিত ঘোষণাটি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর।  তাই দাবিটির সত্যতা যাচাই করার জন্য শুরুতেই প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ শিক্ষাবোর্ডের গ্রেডিং পদ্ধতি অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষায় যেকোনো বিষয়ে পাশ করার জন্য ন্যূনতম নাম্বার হচ্ছে ৩৩ এবং এ প্লাস পাওয়ার ক্ষেত্রে তা ৮০। এই গ্রেডিং পদ্ধতির পরিবর্তন সংক্রান্ত প্রমাণ নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, ফেসবুকে ছড়িয়ে ছবিটি ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে জানো এডুকেশন নামক একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে  “গনিত পরীক্ষা কঠিন হয়েছে তাই সুখবর, মাত্র ৯ পেলেই পাশ, আর ৫৫ পেলে এ প্লাস শিরোনামে আপলোড করা একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর থাম্বনেইলের একটি স্ক্রিনশটই ভাইরাল  পোস্টেগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে।

এই ভিডিওর শুরু থেকে ৪ সেকেন্ড পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে প্রেস ব্রিফিং করতে দেখা যায় এবং সময় টিভির একটি লোগো দেখা যায়। তাই এই প্রেস ব্রিফিং সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য ইউটিউবে প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে সময় টিভির অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আপলোড হওয়া একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। সেখান থেকে জানা যায় এই ভিডিওটি মূলত ছিল এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত শিক্ষামন্ত্রীর এক সংবাদ সম্মেলনের। এই মূল ভিডিওর শুরু থেকে ৪ সেকেন্ড অংশটুকুর সাথে সাথে উপরে উল্লেখিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তাছাড়া সেই ভিডিওর বাকি অংশে ভাইরাল দাবিটির সমর্থনে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় গণিত বিষয়ের পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২৫ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ, শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনটি গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার অনেক আগের। সেই সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমবিবিএস পরীক্ষার জন্য তার কাছে অভিভাবকদের তদবির এবং বিভিন্ন পরীক্ষার সময় প্রচারিত গুজবের সমালোচনা করেছিলেন। এছাড়াও তখন তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁস, নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন পদ্ধতি ইত্যাদি সম্পর্কে বলেছিলেন। কোথাও  তিনি গণিতে পাশ মার্কের ব্যাপারে কিছু বলেননি।

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

 

No Factcheck schema data available.