“সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!” – বিভ্রান্তিকর শিরোনাম ভাইরাল

9
“সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!” – বিভ্রান্তিকর শিরোনাম ভাইরাল “সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!” – বিভ্রান্তিকর শিরোনাম ভাইরাল

Published on: [post_published]

৭ আগস্ট ২০২১ তারিখে “সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!” শিরোনামযুক্ত একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল থেকে। মূলত এই সংবাদগুলোর শিরোনামটি বিভ্রান্তিকর। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, “এ মাসে কী পরিমাণ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া যাবে এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার কেমন থাকবে, তার ওপর নির্ভর করছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি”। এছাড়াও “সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে” এমন কোনো ঘোষণা এখনও সরকার থেকে আসেনি।

সম্প্রতি “সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!” শীর্ষক সংবাদটি ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ এবং পেজে শেয়ার হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে।


উক্ত বিভ্রান্তিকর শিরোনামযুক্ত খবরগুলোর বিস্তারিত অংশে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এর উদ্বৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “সেপ্টেম্বরের মধ্যেই অধিকাংশ শিক্ষার্থী টিকার আওতায় চলে আসবে। আশা করি, এরপর সংক্রমণ কিছুটা কমে আসবে। তাহলে সেপ্টেম্বরে শারীরিক উপস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সীমিত পরিসরে খুলতে পারবো।“ অর্থাৎ এখানে শিক্ষা উপমন্ত্রী আগামী সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আশা ব্যক্ত করেছেন, কোনো নিশ্চয়তা বা ঘোষণা দেননি।

আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ৭ আগস্ট ২০২১ (শনিবার) প্রথম আলোকে বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোন স্তরে কতটুকু পরিমাণ খুলবে, অর্থাৎ খোলার পরিধি কতটুকু হবে, সেটা নির্ভর করছে এ মাসে কী পরিমাণ টিকা দেওয়া যাবে এবং সংক্রমণের হার কত থাকবে, তার ওপর। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাপঞ্জির সঙ্গে সমন্বয় করে খোলার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে”।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম ৭ আগস্ট ২০২১ (শনিবার) প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত খোলার বিষয়ে সরকার থেকে কোনো নির্দেশনা পাননি। তবে তারা শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রায় ৯০ লাখ ডোজ (প্রায় ৪৫ লাখ শিক্ষার্থী) টিকা দেওয়া গেলে সবাইকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব। সেই তথ্যও সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জার্নালের একটি প্রতিবেদন বলছে, “মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপকহারে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যদি চলতি মাসজুড়ে শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম নিশ্চিত করা যায় তাহলে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।“

এদিকে ৭ আগস্ট ২০২১ (শনিবার) সকালে রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন বাঁচাতেই সরকার করোনার এই সংকটে বন্ধ রেখেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাদের জীবন যদি না থাকে তাহলে শিক্ষিত হয়ে কী হবে? তাই আগে জীবন বাঁচাতেই সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।“

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ইবতেদায়ি ও কওমি মাদ্রাসাগুলোতে চলমান ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে যা কেন্দ্র করে সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ খোলা হতে পারে এমন একটি আলোচনা শুরু হয়েছিল। তবে “সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে” এমন কোনো ঘোষণা এখনও সরকার থেকে আসেনি। চলমান টিকা কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর আশা ব্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে “সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!” শিরোনামে কিছু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যা ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভ্রান্তিকর।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

 

No Factcheck schema data available.