ফেসবুক বন্ধের খবরটি ৭ বছরের পুরনো

7
ফেসবুক বন্ধের খবরটি ৭ বছরের পুরনো ফেসবুক বন্ধের খবরটি ৭ বছরের পুরনো

Published on: [post_published]

‘’এই মাত্র পাওয়া : ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করার নির্দেশনা বিটিআরসির ‘’- এমন একটি পোস্ট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, বিটিআরসি সাম্প্রতিক সময়ে এমন কোনো নির্দেশনা দেয়নি। ৭ বছর আগে, ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে বিটিআরসি এসকল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই পুরনো সংবাদটাই সাম্প্রতিক সংবাদ হিসেবে কেউ কেউ শেয়ার করছেন।

গুজবের উৎস

গত ২৩শে মে ফেসবুকের বেশ কয়েকটি গ্রুপে এই গুজবটি দেখা যায়। যেমন দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে

দেখা যাচ্ছে, এই প্রতিটা পোস্টই Zannat Moni নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়েছে।



তবে জান্নাত মনি ছাড়াও আরো কয়েকজনকে সাম্প্রতিক সময়ে এই গুজব ছড়াতে দেখা গিয়েছে। যেমন দেখুন এখানে , এখানে , এখানে ,এখানে ,এখানে , এখানে , এখানে



 

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

BTRC ( Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission) এর ওয়েবসাইট , এবং ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান চালিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুজে পাওয়া যায়নি।

একটি গুজব পোস্টে তথ্যসূত্র হিসেবে দৈনিক প্রথম আলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

এই সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেল, প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে গত ১৫ই নভেম্বর,২০১৫ তারিখে এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল।

৭ বছর আগের সেই খবরটিই অবিকল দাড়ি কমা সহ এখন আবার শেয়ার করা হচ্ছে।

প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে মূল খবরে বলা হয়েছিল, নিরাপত্তাজনিত কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে বিটিআরসি এ নির্দেশনা জারি করেছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধের এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৮ই নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে দু’জন যুদ্ধাপরাধী ( আলি আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী) এর মামলার রিভিউ আবেদন খারিজ হয়। এরপর ২১শে নভেম্বর তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা করেন। সে আবেদন নাকচ হওয়ার পরে ২২শে নভেম্বর,২০১৫ তারিখে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলি আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

এই পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যেন গুজব বা সহিংসতা ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে অনেকে মনে করেন। তবে বিটিআরসি কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে সুনির্দিষ্টভাবে এই কারণটি উল্লেখ করেনি।

২২ দিন পরে , ১০ই ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে ফেসবুক খুলে দেয়া হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই তথ্য জানান। এর পর, ১৫ই ডিসেম্বর,২০১৫ তারিখে হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার,,ইমু, ট্যাঙ্গোসহ বন্ধ থাকা সকল অ্যাপ খুলে দেওয়া হয়।   এ বিষয়ে তৎকালীন কয়েকটি খবর দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে ।

২০১৫ এর এই ঘটনার পরে কখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার খবর পাওয়া যায়নি। সাম্প্রতিক সময়ে বিটিআরসির পক্ষ থেকেও এমন কোনো আদেশ আসে নি।

পুরনো খবর নতুন করে ভাইরাল হওয়ার ফ্যাক্টওয়াচ এই তথ্যটিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ সাব্যস্ত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.