ফেসবুক ব্যবহার করতে মাসিক ১২০০ টাকা খরচ হবে- এমন শিরোনামে একটি তথ্য সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এখানে ১২০০ টাকার যে কথাটি বলা হচ্ছে, সেটি ফেসবুক চালানো নয় বরং ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রামের জন্য আলাদা সুবিধা সংবলিত একটি সাবস্ক্রিপশন বান্ডেল কেনার জন্য। তবে সেটি এখনো বাংলাদেশের জন্য চালু হয়নি। মেটা কর্তৃপক্ষ পরীক্ষামূলকভাবে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে এটি চালু করতে যাচ্ছে।
এছাড়া “pnewsvc.com” নামে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও এই খবরটি ফেসবুকে শেয়ার করা হচ্ছে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে অনুসন্ধান করা হলে, মূলধারার বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ধরণের একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। এর মধ্যে বিবিসি নিউজ বাংলায় ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রামের জন্য মেটা ‘ব্লু টিক’ ভেরিফিকেশন বিক্রি শুরু করতে যাচ্ছে। অর্থ্যাৎ, ফেসবুক একাউন্ট ভেরিফাইড করার জন্য টাকার বিনিময়ে একটি সুবিধা বিক্রি করবে তারা।
জানা যায়, মেটা কর্তৃপক্ষ ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রামের জন্য একটি সাবস্ক্রিপশন বান্ডেল চালু করতে যাচ্ছে যার ফলে, কোনো ব্যবহারকারী তার একাউন্টের প্রামাণ্য হিসেবে একটি “ব্লু টিক” নিজের একাউন্টে যুক্ত করতে পারবেন। যা দেখতে নিম্নোক্ত ছবির মতো হবে-
মেটার তথ্যমতে, এটি শুধুমাত্র ভেরিফিকেশনই না। এর ফলে উক্ত ব্যবহারকারীর দৃশ্যমানতাও বাড়বে এবং এর সাথে অন্যান্য সুরক্ষা সেবাসহ যুক্ত থাকবে।
তবে এটি এখনো পরীক্ষাধীন আছে। শুরুতে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে এটি চালু হতে যাচ্ছে। সাধারণ ওয়েব ব্রাউজারের জন্য মাসিক ১১.৯৯ ইউএস ডলার এবং এন্ড্রয়েড এবং আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য ১৪.৯৯ ইউএস ডলার খরচে এই সুবিধাটি পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে এটি বাকি দেশগুলোর জন্যও উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
অন্যদিকে যে নিউজপোর্টালের মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়েছে, তার বিস্তারিত অংশেও প্রায় একই কথাই বলা হচ্ছে। তবে শিরোনামে “ফে’সবুক চালাতে মাসিক খরচ দিতে হবে ১২০০ টাকা!!”- এমন দাবি করায় এক ধরণের বিভ্রান্তির তৈরি হয়েছে। সাধারণ ব্যবহারকারীদের অনেকেই মনে করছেন যে, সবাইকেই হয়তো এই পরিমাণ টাকা দিতে যদি তারা ফেসবুকে ব্যবহার করতে চায়। কেউ কেউ এর জন্য নিজের ফেসবুক একাউন্ট ডিলিট করে দেয়ার কথাও ভাবছেন।
অর্থ্যাৎ, বুঝাই যাচ্ছে ফেসবুক ব্যবহার করার জন্য নয়, বরং ফেসবুকে ভেরিফিকেশনসহ বিশেষ কিছু সুবিধা পাওয়ার জন্য মেটা একটি সাবস্ক্রিপশন বান্ডেল চালু করতে যাচ্ছে। তবে সেটি এখনো বাংলাদেশের জন্য চালু হয়নি। সব অসংগতি বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ এসব ফেসবুক পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?