২রা এপ্রিল আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-চেকিং দিবস উপলক্ষে তথ্যযাচাই সংস্থা ফ্যাক্টওয়াচ এর উদ্যোগে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ গবেষণা ভবনে “কমব্যাটিং ইলেকশন মিসইনফরমেশন” শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। উক্ত বৈঠকটিতে উপস্থিত ছিলেন ফ্যাক্টওয়াচ এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সুমন রহমান, এএফপি ফ্যাক্ট-চেক বাংলাদেশের সম্পাদক কদরুদ্দীন শিশির, বুম বাংলাদেশ এর সম্পাদক আমির শাকির ও ফ্যাক্ট-চেকার শোয়েব আব্দুল্লাহ, রিউমর স্ক্যানার এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা মো: ছাকিউজ্জামান ও ফ্যাক্ট-চেকার তাওসিফ আকবর, ডিসমিসল্যাব এর রিসার্চ লিড মিনহাজ জামান, এবং ফ্যাক্টওয়াচ এর ফ্যাক্ট-চেকারবৃন্দ। গোলটেবিল বৈঠকটি আয়োজনের মূল আলোচ্য ছিল আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে ফ্যাক্ট-চেকারদের ভূমিকা কি হবে, ফ্যাক্ট-চেকাররা কি কি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে, বাংলাদেশে ফ্যাক্ট-চেকারদের জোট তৈরির প্রয়োজনীয়তা, এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম এর সম্পাদকদের ফ্যাক্ট-চেক বিষয়ে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এর জন্য কর্মশালা এবং ফ্যাক্ট-চেকারদের সাথে উন্মুক্ত আলোচনার ব্যবস্থা করা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ফ্যাক্টওয়াচ এর ফ্যাক্ট-চেকার শুভাশীষ দীপ গোলটেবিল বৈঠকটির উদ্দেশ্য নিয়ে একটি শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। তারপর ফ্যাক্টওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সুমন রহমান আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং উন্মুক্ত আলোচনা শুরু করার জন্য আমন্ত্রণ জানান।
নির্বাচনের সময়গুলোতে প্রার্থীরা তাদের পক্ষে জনমত তৈরি এবং অন্য প্রার্থীকে হেয় করার উদ্দেশ্য নিয়ে বিভিন্ন অপতথ্য, গুজব, এবং বানোয়াট খবর প্রকাশ করে থাকে। আলোচনায় অংশগ্রহণকারী ফ্যাক্ট-চেকাররা বিগত বছরগুলোতে সংঘটিত বিভিন্ন নির্বাচনের উদাহরণ টেনে এনে বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন। তখন নির্বাচনকালীন মিসইনফরমেশন কেমন হতে পারে এ নিয়ে সবাই যার যার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়া এর প্রেক্ষিতে ফ্যাক্ট-চেকাররা কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন তা নিয়েও ব্যপক আলোচনা হয়।
এসময় আমির সাকির বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাক্ট-চেকাররা এখনও একত্রিত হয়ে কাজ শুরু করেননি, যার কারণে কোন একটি নির্দিষ্ট ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠান বিপদে পড়লে অন্যদের কিছু করার থাকে না। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ফ্যাক্ট-চেকারদের নিয়ে একটি জোট তৈরির আগ্রহ পোষণ করেন সবাই। জোট নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের কিছু কিছু উদ্যোগ তুলে ধরেন মোঃ ছাকিউজ্জামান। সুমন রহমান বাংলাদেশে ফ্যাক্ট-চেকারদের জোটের সাথে অন্যান্য সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন এবং মিসইনফরমেশন নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী এমন কোন প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে একটা বৃহত্তর প্লাটফর্ম তৈরির প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে আলোকপাত করেন।
এএফপি ফ্যাক্টচেক সম্পাদক কদরুদ্দীন শিশির বাংলাদেশের গণমাধ্যম এবং ফ্যাক্ট-চেকারদের পাশাপাশি কাজ করার বিষয়ে আলোকপাত করেন। এ বিষয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়েও সেখানে আলোচনা হয়। এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সাথে ফ্যাক্ট-চেকারদের উন্মুক্ত আলোচনার সিদ্ধান্ত বৈঠকে গৃহীত হয়। ডিসমিসল্যাবের রিসার্চ লিড মিনহাজ আমানও এ বিষয়ে মূল্যবান মতামত জ্ঞাপন করেন।
এসময় ফ্যাক্ট-চেকিং এর প্রযুক্তিগত নানা দিক নিয়েও সবাই আলোকপাত করেন। এর জন্য বিভিন্ন কর্মশালার প্রয়োজনীয়তা প্রকাশ করেন শোয়েব আব্দুল্লাহ।
আগামী দিনগুলোতে এমন আরো আলোচনার আশাবাদ ব্যক্ত করে উক্ত গোলটেবিলের সমাপনী বক্তব্য রাখেন সুমন রহমান। তার বক্তব্যে তিনি ফ্যাক্টচেকার ও সমমনাদের জোট তৈরি এবং গণমাধ্যমের সাথে উন্মুক্ত আলোচনার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেন।