সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দু’জন সমন্বয়কের নামে একটি মন্তব্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিন্ন ভিন্ন পোস্টে সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং আসিফ মাহমুদের বরাতে দাবি করা হচ্ছে, “যে কোনো প্রতিষ্ঠানে নারীদের অবশ্যই শালীন পোশাক পরিধান করতে হবে, কোনো অশালীন পোশাকে অশ্লীলতার ঠাঁই নেই এদেশে”। অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ভূয়া কিছু আইডি থেকে সারজিস আলম এবং আসিফ মাহমুদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে এমন তথ্য ছড়াচ্ছে। তাদের মূল আইডিতে এমন কোনো স্ট্যাটাস পাওয়া যায় নি।
ভাইরাল এসব ফেসবুক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এবং সারজিস আলমের নাম উল্লেখ করা হয়। তাদের নাম এবং ছবি ব্যবহার করে আইডিগুলো থেকে এমন স্ট্যাটাস দেয়া হয়। আইডিগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, তাদের মূল আইডি থেকে এই আইডিগুলো অনেক ভিন্ন। ফলোয়ার সংখ্যা মূল আইডি থেকে অনেক কম এবং সেখানে সঠিক সময়ে তাদের কোন লাইভ ভিডিও নেই কারণ ভূয়া আইডি থেকে সঠিক সময়ে লাইভে আসা অসম্ভব। সারজিস আলমের একটি একাউন্ট এবং একটি পেজ রয়েছে। আন্দোলনের শুরু থেকে তাকে নিজের আইডি থেকে অনেকসময় লাইভে আসতে এবং স্ট্যাটাস দিতে দেখা গিয়েছে। মূল আইডির কার্যক্রম পর্যালোচনা করার মাধ্যমে ভূয়া আইডি থেকে মূল আইডিকে আলাদাভাবে সনাক্ত করা যায়। একইভাবে আসিফ মাহমুদের মূল একাউন্টটিও সনাক্ত করা হয়।
তাদের মূল আইডিগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, স্বাভাবিকভাবেই সেখানে এমন কোনো ফেসবুক স্ট্যাটাস নেই।
এছাড়া সারজিস আলমের মূল আইডির সাথে ভূয়া আইডির বয়স পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, মূল আইডিটি ৪ এপ্রিল, ২০১৪ এ খোলা হয়েছে, কিন্তু ভূয়া আইডিটি ২৩ এপ্রিল, ২০২৩ এ খোলা হয়েছে।
Sarjis Alam’s Fake Facebook IDSarjis Alam’s Original Facebook ID
একইভাবে আসিফ মাহমুদের মূল আইডির সাথে ভূয়া আইডির বয়স পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, মূল আইডিটি ২৪ মার্চ, ২০১৬ এ খোলা হয়েছে, কিন্তু ভূয়া আইডিটি এই চলতি আগস্ট মাসের ১১ তারিখে খোলা হয়েছে।
Asif Mahmud’s Fake Facebook ID Asif Mahmud’s Original Facebook ID
এছাড়া, সমন্বয়করা এমন যেকোনো বক্তব্য দিয়ে থাকলে সেগুলো মূলধারার গণমাধ্যমে আসতো। কিন্তু মূলধারার গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি।
অতএব, পরিষ্কারভাবেই বুঝা যাচ্ছে ভূয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে এমন মন্তব্য প্রকাশ করা হচ্ছে। মূলত, সারজিস কিংবা আসিফ এমন মন্তব্য করেননি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এমন দাবিকে মিথ্যা চিহ্নিত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।