আর্থিক সহায়তা চেয়ে পোস্ট করা ছবিটি ভারতীয় শিশুর

112
আর্থিক সহায়তা চেয়ে পোস্ট করা ছবিটি ভারতীয় শিশুর
আর্থিক সহায়তা চেয়ে পোস্ট করা ছবিটি ভারতীয় শিশুর

Published on: [post_published]

‘অনিক দাস’ নামের কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত একটি শিশুর জন্য আর্থিক সহায়তা সাহায্য চেয়ে করা একটি পোস্ট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এখানে যে ছবিটা ব্যবহার করা হয়েছে, অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে সেই ছবিটা ভারতের ‘শ্রীয়ান’ নামক ভিন্ন একটি অসূস্থ শিশুর, যে শিশুর জন্যও অতীতে আর্থিক সহায়তা নেওয়া হয়েছিল, এবং শিশুটি বর্তমানে সূস্থ আছে।

ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে । জুন মাসের প্রথম থেকে এসব পোস্ট দেখা যাচ্ছে।


মূলত মোছা আনিকা আক্তার নীলা নামক আইডির মাধ্যমেই ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে এই সাহায্যের আবেদনটি ছড়িয়ে পড়েছে।

এসব পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, অনিক দাস অনেকদিন ধরে কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত। বাবা বাদল দাস ও মা রীনা মন্ডল (গার্মেন্টস কর্মী) অনেকদিন ধরেই চিকিৎসা চালিয়ে আসছেন।কুমিল্লা  মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিছুদিন ধরে  চিকিৎসাধীন আছে। চিকিৎসার জন্য  ভারতের মুম্বাইয়ে টাটা মেমোরিয়াল হসপিটালে নিয়ে যেতে পারলে অনেক কম খরচে চিকিৎসা করানো যাবে তাই সেখানে   নিয়ে যাওয়ার জন্য ডাক্তার সাহেবরা পরামর্শ প্রদান করছেন এতে করে ১০/১২ লক্ষ টাকার প্রয়োজন।যা গার্মেন্টসে কর্মরত বাবা মায়ের জন্য অনেকটাই অসম্ভব । অসহায় বাবা ছেলেকে বাচাতে আমাদের সবার কাছে সাহায্যর জন্য হাত পেতেছেন  ।

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

ছড়িয়ে পড়া ছবিটা ধরে ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে,  ভারতভিত্তিক কেটো (Ketto) নামক ফান্ডরেইজিং ওয়েবসাইটে এই ছবিগুলো পূর্বেই প্রকাশিত হয়েছিল। তবে সেখানে শিশুটির ভিন্ন পরিচয় ছিল। ২ বছর আগে পোস্ট করা এই ভুক্তি থেকে জানা যাচ্ছে, শিশুটির নাম শ্রীয়ান (Shriyan) , তাঁর বয়স ৬ বছর, তাঁর বাবা একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন, শিশুটির রোগের নাম Acute Lymphoblastic Leukemia , এবং এই রোগের চিকিৎসার জন্য প্রায় ২৬ হাজার ডলার ( ২৯ লক্ষ টাকা) দরকার।

এই ভুক্তিতে পরবর্তীতে যোগ করা কয়েকটি আপডেট থেকে দেখা যাচ্ছে যে শিশুটি হায়দারাবাদের সিটিজেনস হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন ছিল। এক বছর আগের আরেকটি আপডেট থেকে দেখা যাচ্ছে যে শিশুটি হাসপাতাল থেকে বাসায় এসেছে।

যারা তাকে আর্থিক সাহায্য করেছে, তাদেরকে ধন্যবাদও জানানো হয়েছে এই আপডেট এ।

অর্থাৎ, ফেসবুকে সাম্প্রতিককালে “অনিক দাস” নামে শিশুর ছড়িয়ে পড়া তথ্যের সাথে প্রকৃত রোগীর রোগের নাম ,ঠিকানা বা কোনো কিছুরই মিল পাওয়া যাচ্ছেনা।

যেহেতু , বাংলাদেশের ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিটা সাম্প্রতিক, এবং ভারতভিত্তিক উক্ত ফান্ড রেইজিং ওয়েবসাইটের ছবিটি ২ বছরের পুরনো, তাই নিশ্চিতভাবে বলা যায়, পুরনো ছবিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভিন্ন একটি গল্প সাজিয়ে আর্থিক সাহায্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এসব পোস্টকে ‘মিথ্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করছে।

ফ্যাক্টওয়াচের সনাক্ত করা ভুয়া সাহায্যের আরো কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে ,এখানে , এখানে , এখানে ,এখানে  ।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

 

No Factcheck schema data available.